শৈশবকালে  শীতের কোলে, কেটেছে কতনা দুরন্ত,
পথে প্রান্তরে ছুটাছুটি কত, ডানপিটে আনন্দ অনন্ত।
মাঠে মাঠে পাকা সোনার ফসল, কৃষাণের হলে সারা,
দলে দলে বিলে ছেলেরা মিলে, ছুটেছি বাঁধনহারা।
পরীক্ষা শেষে ছুটি স্কুলে, পড়ালেখার নেই তাড়া
নানা ফন্দিতে যায় দিন বেলা, ঘুরে ঘুরে পাড়া পাড়া।
মনে পড়ে সেই পৌষ-মাঘ মাসে, ঘন কুয়াশায় ঢাকা ভোর,
খড়-পাতা পুড়ে আগুনে মিটিতাম,কনকনে শীতের ঘোর।
হঠাৎ কখনো ডাক দিত জোরে, খেজুর রসের ফেরী
খুশীতে সকলে দিতাম দৌঁড়, নাকরে একটুও দেরী।
বাড়ির সকলে ভাগাভাগি করে, কিনত রস মিলেমিশে
কাঁচা রস আর মুড়মুড়ে মুড়ি, খেতাম মনের হরষে।
দিদি আর পিসী আসতো নায়র, এমন শীতের দিনে
মহাধুমধামে আনন্দ জোায়ার, বয়ে যেত আমাদের মনে।
মায়ের হাতের ভাওয়া পিঠাতে, মহাধুম শীতের ভোরে
গরম গরম খাওয়া হতো বেশ,  মাকে ঘিরে চারিধারে।
খেজুরের রসে মধুর পায়েস,  কতনা রসালো স্বাদ
সুমিষ্ট সুবাসে বারে বারে মনে জাগত খাবার সাধ।
বাবা আমাদের সাথে সাথী হতো, পিঠা-পায়সের আসরে
নানান কথায় জমিয়ে দিত, রসিকতায় হাসাত সবারে।
বাড়ির  সকল কাকী জেঠিরা, দুপুরের আহার শেষে
মিষ্টি রোদে আড্ডা জমাত, বাগান - বাগিচায় বসে।
ভাই বোনেরা হাসি ঠাট্টায় বেড়াতাম একসাথে
পুকুরের পাড়ে,  সরষে ক্ষেতে, বিলে বিলে সরু পথে।
শীতের দিনের সেই আনন্দবিলাস, আজ আর কোনধারে নাই
বড় সাধ জাগে ক্ষণিকের  তরে,  যদি ফিরে একবার পাই।
জানি আর তাহা আসবেনা ফিরে, নাচবেনা আনন্দে মন
তবু খুঁজে ফিরি স্মৃতির দুয়ারে, সেদিনের আনন্দ অনুরণন ।
==============================