সেদিন সন্ধ্যায় তুমি খুলেছিলে দোর
কয়েক সেকেন্ডের বিমূঢ়তা
আজও ভোলাবার নয়


সেদিন প্রভাতে তুমি হেসেছিলে খুব
যেন স্রোত ভাসিয়ে কুল
আজও লেগে চোখের পাতায়


সেদিন বিকেলে ছিল কিঞ্চিৎ নত মাথা
লজ্জাভরা পদচালনা নিঃশব্দ
দেখেও না দেখার করেছি ভান


যতটুকু আজ বুঝি
তুমি দিয়েছিলে খুলে প্রাণ
স্বপ্ন দেখেছিলাম তরুণ আঁখিতে
রাতের জ্যোৎস্নায় নিয়েছিলাম ঘ্রাণ


পড়ার ঘরে ছুটে এসে দিয়েছিলে যেটি
আমি সযত্নে বহু বছর রেখেছিলাম পুষে
ছোট্ট হালকা-হলুদ খামে ভরা
চারটি লেখা, ছবি দুটি
রাখা ছিল ডায়েরির ভাজে ভাজে
এখনও রয়ে গেছে
শুধু মনের পাতাতে


আজ কত বছর হলো তোড়া??
নয় নয় করে সাতাশ বছর নয়কি..


তবু ফিরে ফিরে কতবার রেঙেছো হৃদয়
ব্যথার রঙে
আচ্ছা, ব্যথার কি সত্যি কোনো রঙ হয়!!


ওই নামে কোনো জায়গা ছিল শহরতলিতে
জানতাম না তখন, তবু খুঁজেছি অলিতে গলিতে
আজ জানলে ঠিক করতাম বার


কিন্তু পায়নি তোমায় খুঁজে সেদিন
পাবলিক বুথের কয়েনের ঝংকার


কালের পাতায় গেছ তুমি হারিয়ে
আজ চাইলেই পারি গিয়ে খোঁজ নিতে
আমাকে হয়তো পাগল ভাববে, ভাবুক
কিছু যায় আসে না
কিন্তু চাই না সন্ধান এভাবে


এর চেয়ে বরং, হোক কোনোদিন অকস্মাৎ
বাসে, ট্রেনে, ট্রামে অপ্রস্তুত সাক্ষাৎ..


ভারী ইচ্ছে করে ভাবতে কেমন হয়েছো তুমি এখন
ঈষৎ স্থুল, বা মেটে হয়ে যাওয়া শ্যামলা রং
নাকি ভেঙেছে শরীর বয়েসের ভারে
নাঃ, বড্ড খারাপ ভাবছি
হয়েছ হয়তো আরো উজ্জ্বল
ভালোবাসার টানে, উপচে ওঠা সংসারে


যাই হও না কেন, তাই সই
জানি না তো কিছুই


তবু চিনবো তোমায়, বলব:
“একটু দাঁড়িয়ে যাও তোড়া,
দেখ তো, দেখ তো ভালোভাবে
একবারটি ফিরে
চিনে নিতে পারো কি আমায়
চোখে চশমা, পাকধরা ছাইরঙা এই চুলে"...