স্টেথো...


বুকে স্টেথো ছুঁইয়ে তো রোজ সপ্তাহে দেখতো সে.,
আমাদের গ্রামের ডাক্তার মেয়ে।
কত ঢিব! ঢিব! শব্দ শুনেছে..।
কতবার সে স্পন্দন গুনেছে।
ইয়ত্তা নেই তার..
হয়তো শুনতে পারেনি আমার হৃদয়ের সুরের ঝংকার.।
কি জানি পেরেছিলো কি না; শুনতে হয়তো পেরেছিলো।
যাই হোক, রোগ সেরে গেলেও আসা যাওয়া ছিলো।
মন খাঁ খাঁ একটা রোগ ধরেছিলো জাপটে আমায়।
কিছুই বলেনি সে, হয়তো প্রেসক্রিপশনে লিখতো সে দাঁড়ি কমায়।
বুঝিনি আমি কিছুই তার ডাক্তারি ভাষা।
হয়তো স্টেথো শোনাতেই পারেনি, সবটাই ধোঁয়াশা।
একদিন সময় এলো সে বললো 'তুমি সুস্থ এবার।
টাকা অনেক খরচ হচ্ছে আসতে হবে না আর..।'
মুচকি ম্লান হেসে আমায় শেষ প্রেসক্রিপশন দিলো হাতে।
গ্রাম ছেড়ে বিদেশ গেলো সে সেই রাতে।
আমি মন খাঁ খাঁ রোগে আক্রান্ত হলাম আবার।
দিন দিন হীনবল জানি না কেন মুখে রোচে না খাবার।
কিছু খেলেই বমি হয়, বেরিয়ে এলো একদিন রক্ত।
মফস্বলের এক ডাক্তার বললো বাইরে নিয়ে যান এ রোগ ভারী শক্ত।
নাকে নল, হাতে চ্যানেল, বিল বাড়ে তরতর।
বিক্রি হতে বসলো ঘটি বাটি ঘর।
সময় এলো শমনের বললো একমাস বাকি।
আমি কাঁপা হাতে এখন সেই স্টেথো ধরা হাতটি আঁকি।
আগেও পাঠিয়েছিলাম চিঠি, আসেনি উত্তর।
অপেক্ষায় ছিলাম কত দিন রাত ভোর।
লিখছি এই শেষ কটা লাইন তাঁর জন্য।
যে কটা দিন দেখেছিলে আমার সত্যিই ধন্য।
যেই না তুমি গেলে চলে।
ঝাপসা হয়ে আসছে চোখ নাকের নল গেল খুলে....


©রূপম ভৌমিক
#রূপমেরএলোমেলোকলম