ময়না তদন্ত্রের রির্পোট টা হাতরাতে হাতরাতে
ডাক্তার কাকু বললেন...
খোসাটির বয়স ১৪ বছর
পাশের নার্স অবাক হয়ে!
খোসা মানে?
মেয়েটির নাম!
এই হসপিটালেই জন্ম নিয়েছিল,
এখানেই মৃত্যু হলো।
মেয়েটির দুঃখ আর ঘুচলো না।
আমি তখন ২১ গ্রাম।
পাশে বসে মুচকি হাসছি আর বলছি;
সত্যিই কষ্ট আমার ঘুচলো না।
সেদিন বড়ো যুদ্ধ করতে হয়ে ছিল আমাকে
৪০কোটি শুক্রানুর সঙ্গে...
যুদ্ধে জিতে যখন বিজয় স্থানে পৌছুলাম,
সকলে কি আনন্দিত ছিল;
তা দেখার মত।
কত জনের কত রকরের স্বপ্ন আমায় ঘিরে,
আমি বড়ো হচ্ছি আরো বড়ো হচ্ছি...
ওজন বাড়ছে।
০ থেকে ১গ্রাম ২গ্রাম...  
আদরো বাড়তে লাগলো ওজনের সঙ্গে পাঙা দিয়ে।
হঠাৎ করে একদিন ডাক্তার কাকুকে দেখলাম
তিনি বড়ো যত্নে সকলের সঙ্গে পরিচয় করালো আমাকে।
আমি নির্বাক, কি সুন্দর এ পৃথিবী
কত মমতা কত আদরই না আছে এই পৃথিবীর বুকে,
ঘুমোচ্ছিলাম আপন মনেতেই,
স্বপ্ন দেখছিলাম
জীবনের প্রথম স্বপ্ন।
কাদের চিল্লা -চিল্লিতে আমার ঘুমটা ভেঙে গেলো।
ঝগড়ার শেষে যেটুকু বুঝতে পারলাম
আমি মেয়ে, তাই আমার জন্মানো মানা।
ক্রমে ভয় বাড়তে লাগলো, যখন
মোটা গলার শব্দে শুনতে পেলাম...
ফেলে দিয়ে আয় ওকে কোনো ডাসবিনে।
মা হাউ মাউ করে কাঁদছে
তখন তো সবে আমি দুদিনের শিশু,
মায়া জন্মেছিল তাদের ওপর!
কিন্তু সে রাতে সবাই ঘুমাচ্ছিল।
চিনি না জানি না এমন একজন আমাকে নিয়ে চলে গেল,
আমি কেঁদে উঠলাম, মুখ চেপে ধরলো
হয়তো সে মুহুর্তেই শেষ হয়ে যেতাম
২১ গ্রামের খোসা হয়ে যেতাম।
সকালে ঘুম ভাঙলো!
একটা জঙ্গলে আমি শুয়ে আছি,
পরে বুঝলাম ওটা জঙ্গল না..
যে আমাকে বানিয়েছে তার এটো ফেলার ঘর,
কত মানুষ সেখানে আসছে যাচ্ছে
পুজো করছে তাদের পরম দেবতার।
কিন্তু আমি ডাসবিনে পরে আছি কেউ দেখেও দেখছেনা,
কেউ বা দেখে বাহানা ধরছে না দেখার
কেউ কেউ আবার;
দুটা কলা কিংবা একটা আপেল ঢেল মারছে
আমি কাঁদছি কাদছি।
আরো কাঁদছি আরো কাঁদছি...
কেউ তাকায় না আমার দিকে!
এরা মানুষ রূপী জানোয়ার..
মৃত পাথর কে নিজের সার্থে বানিয়েছে মহান।
কাঁদতে কাঁদতে যখন প্রায় শব্দ শেষের পথে
তখন এক ভিখিরি এসে আমায় তুলে নিয়ে গেল
আপন মায়ের বেশে....।
সে তেমন কিছু পেত না,
তবে আমাকে কষ্টে রাখতো না কখনোই।
এমনি করেই দিন যায়,
সেদিন ভিখিরি মায়ের বড্ড অসুক করেছিল
মাঝরাতে উপায় না পেয়ে নিজেই বেরিয়েছিলাম
ওষুধ আনতে।
ঘরে যেটুকু ছিল সেটুকু দিয়েই যখন মায়ের জন্য
ওষুধ নিয়ে ফিরছিলাম!
শুনতে পেলাম পাশের বাড়ির টিভিতে বেজে উঠলো
মহালয়ার ধ্বনি
কিছু সত্য ওষুর চরিত্র ঝাপিয়ে পড়লো আমার ওপর,
আমি নিরুপায়
চিৎকার করলাম
আমার চিৎকার শোনার কেউ নেই
কারন আমি দুর্গা নই!
ওই মাটির দুর্গার মতন আমাকে কেউ সুন্দর করে বানায়নি।
শরীরের সমস্ত অংশ দিয়ে যখন রক্তের বন্যা
তখন বীরেন্দ্রকৃষ্নের গলায় শুনতে পেলাম "এভাবেই দুর্গা ওষুর দের নিধন করলেন"।
চোখ বুঝে এলো।