আমার এই গাঁ
আমার মা
আমার অভাব
এই সব কিছুই আমার অহংকার
প্রথমেই বলি আমার মায়ের কথা
খালি পায়ে ফেরি করতেন হাটে হাটে
উপোষ তাঁর নিত্য সঙ্গী
রৌদ্রের তাপে শুকিয়ে যায়
শরীরের চামড়া
তবুও ফেরি করে চলে
নিজের সংসারের জন্য
এই দারিদ্র্য এনেছে আমার বিজয় মুকুট
এই দারিদ্র্যই আমার অহংকার
একবেলা খেয়ে
কাদা মাটি হেঁটে
আট কিলোমিটার গেছি স্কুলে
সারা পথে ক্লান্তির ছাপ
অলস সূর্যের মতো আমার শরীরে ভেসে ওঠে
বিলাসিতা আসে নি আমার
মায়ের অফুরন্ত কাজের নেশায়
আমি দেখিছি নিজের চোখে
দারিদ্র্য কেমন
আগুন হয়ে জ্বলছে দাউদাউ হয়ে
এটাই আসল অহংকার
আমার গ্রামের পথগুলো
সব এঁকে বেঁকে পাড়ায় পাড়ায়
ঝাউগাছের দীর্ঘ নিঃশ্বাস
কোনো কোনো পাড়ায় পাড়ায়
গ্রাম্য বধূরা অভাবে
মাঠে মাঠে কাজ করে
ছোটো ছোটো শিশুরা
ক্ষুধার্ত হয়ে মায়ের কাছে আসে ছুটে
উদাসীন চোখে শুধু জল আসে
অলস ভরে তাকিয়ে থাকে অসহায় ভাবে
এই গ্রাম আমার
এমনই দৃশ্য আমার অহংকার
আমার দারিদ্র্যতা আমার প্রাণ
আমার দরিদ্র গ্রাম আমার অহংকার
আমার গরীব বাবা মা আমার দর্শন
এই পৃথিবীতে চিৎকারে করে বলবো
দারিদ্র্যতা আমার অহংকার ।