জ্বলছে মানবতা,
দেখতে পাও না?
প্রতিটি আগুনে
ঝলসে যাচ্ছে নিষ্পাপ মুখ,
একটি করে শিশুর স্বপ্ন,
একটি করে মায়ের প্রার্থনা।
মনুষ্যত্ব এখন
বিলুপ্তপ্রায় এক প্রজাতি,
শুধু তার ছায়াটুকু
হেঁটে বেড়ায় কংক্রিটের জঙ্গলে,
যেখানে হৃদয়ের বদলে
লুকিয়ে থাকে শীতল ইস্পাত আর মারণাস্ত্র।
আমরা দেখি,
শুনি,
তবু কিছু বলি না।
ভয়ের মোটা চাদরে
নিজেকে মুড়ে নিই, বেঁচে থাকার মিথ্যা প্রয়াসে।
আমরা এখন নিঃসঙ্গ হয়ে গেছি
এই হিংস্র পৃথিবীতে।
মরছে মানুষ—
প্রতি দিন, প্রতি মুহূর্তে।
বুলেটের গর্জনে,
বোমার আর মিসাইলের উত্তাপে,
ক্ষুধার যন্ত্রণায়,
অবহেলার অন্ধকারে।
পৃথিবীর কান্না
মিশে যায় বাতাসে—
কেউ শুনতে চায় না,
কেউ বুঝতে চায় না।
সংবাদপত্রে তারা কেবল সংখ্যা,
টিভির স্ক্রলে নিছক পরিসংখ্যান।
কিন্তু সেই সংখ্যাগুলোর পেছনে
লুকিয়ে থাকে একটি জীবন,
একটি গল্প,
একটি পরিবার, একটি ইতিহাস।
এই দখলদারিত্বের খেলায়
পশুত্বই বেঁচে থাকে।
রাজা-উজিরের চাল চলে,
ভূখণ্ডের লোভে
রক্তের বন্যা নামে।
মানবিকতা এখানে বিপন্ন—
যাকে সরিয়ে দেওয়া যায়
নিয়ম ছাড়াই।
জয়ী সে-ই,
যে বেশি হিংস্র,
যে বেশি নির্মম।
এই খেলায়
নেই দয়া,
নেই নৈতিকতা—
শুধু আছে ধ্বংসের নেশা।
আমরা দাঁড়িয়ে দেখি
এই রক্তাক্ত মঞ্চ।
মানুষের মুখোশ পরা দানবেরা
নৃত্য করে গর্বে।
কেউ থামায় না।
কেউ প্রশ্ন তোলে না।
তবু প্রশ্ন রয়ে যায়—
এই খেলা কবে থামবে?
কবে আবার জ্বলবে
মানবতার শেষ প্রদীপ?
মনুষ্যত্ব কি সত্যিই মরে গেছে?
না কি সে ঘুমিয়ে আছে—
একটি সাহসী সাময়ের অপেক্ষায়?