কত সহজে বুকে  টেনে নিয়ে বলেছিলে
'সারাজীবন এখানেই থাকবি
তারপর —পৃথিবীর শেষ নির্মমতা আমাকে অভয় দিতে এসে- বলেছিল
"পৃথিবীতে হারানোর কিছু নেই",
পৃথিবীর মাটিও জানেনা তার বুকে কতো লোক এসেছিলো
আবার চলেও গেছে - কেউ কারো নয়
কেউ কারো হয়না,
এইটাই নির্মম সত্য।
তবুও তুমি আমার থাকবে
যতদিন সূর্য চন্দ্র থাকবে ততদিন তুমি আমার...
অথচ...

পশ্চিমাকাশে তখন নিভু নিভু আলো,
পাখিদের চোখে ঘরে ফেরার ব্যাকুলতা।
আমারও মনে ভেসেছিল এক নীরব আকুতি—
একটা মানবীর অবয়ব
কিন্তু তা রয়ে গেল শব্দহীন, দিশাহীন, ব্যথাহীন অনুভবে।

মাঝে মাঝে মনে হয় আমার মন মানসী আজও আছে
আগেকার মতো, আপনার চেয়ে আপন হয়ে ,
মনের গহীনে এক অনুজ্জ্বল জোনাকির মতো,
সে আমার বিস্বাস-
নিভু নিভু সন্ধ্যার আকাশে জ্বলছে ক্ষীণ আলোয়।
প্রতিটি ধূলিকণায়, শহরের প্রতিটি বাঁকে,
একটি চাপা শূন্যতা হয়ে আজও জেগে আছে আমার ভিতরে।

প্রতিদিন,
প্রাতে, সাঁঝে, নিঃশ্বাসে—
বসে কি যেনো খুঁজি আপনমনে
মনে হয়
এখনো কেউ যেনো পাশে হেঁটে চলে ছায়ার মতো,
প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে আসে তার অভিমান
ভুলে যাওয়া কোনো পুরনো গানের সুরে।

নীরব বাতাসে ভেসে আসে একটা অন্য অনুভূতি,
এখনো গভীর বিশ্বাস এসে বলে যায়
পার্থিব প্রাপ্তিতে সুখ নেই আর,
কেনো যে অবলীলায়
অবসন্ন স্মৃতির ছাইয়ে মাঝে মাঝে
কি যেনো জ্বলে উঠে অজান্তে মৃদু জ্যোৎস্নায়
বিদীর্ণ মাঠের মাঝখানে ফসফরাসের মতো।

তারারা রাতের গভীরে প্রশ্ন করে—
“সে কোথায়, যে ছিল তোমার পৃথিবী?”
আমি বসে থাকি নির্জনতায়,উত্তরহীন,
স্মৃতির পাতায় অলিখিত হিসাব লিখে যাই।
জানি, তুমি নেই।
এই বাস্তবতা এখন চেনা, নির্জন আর কষ্টহীন।

এক অদৃশ্য প্রতিশ্রুতি বারবার আমাকে তাড়া করে,
একটি মৃদু উষ্ণতা গায়ে এসে লাগে,
মনে হয়—
সেটা পরিচিত নিঃশ্বাস।
যা আজ আর নেই কাছে-
তবুও নিত্য আসাযাওয়া আমার আঙ্গিনায়—
আমার স্মৃতির গভীরে।