আমার সাথে তোমার প্রথ্ম পরিচয়
সহজ পাঠের হাত ধরে
সরল মনের অনাবিল আনন্দে-
আমি চলেছিলেম, কুমোর পাড়ার গরুর গাড়ী চড়ে-
কখনো ব্যঙ্গমা ব্যঙ্গমীর দেশে,
কখনো বা তেপান্তরের মাঠে।


তারপর কত কী হয়ে গেল--
কত সন্ধ্যায় ঠাকুর ঘরে তোমার ছবি খুজেছি
জিজ্ঞাসাও করেছি কত জনে-
সদুত্তর পাইনি।


এরপর তুমি ধরিয়ে দিলে সঞ্চয়িতা,
পাড়ার জলসায় ভরে গেলাম প্রশ্ংসায়
সে তো তোমার জন্য।


একে একে ছুঁয়ে দেখা শুরু হল-
গল্পগুচ্ছ, ঘরে-বাইরে, গোরা, রক্তকরবী-
তারপর সে কী নেশা-
নেশার ঘোরে বুঁদ হয়ে থাকলাম
চোখের বালি, চতুরঙ্গ ইত্যাদি নিয়ে।


এভাবে নেশার ঘোরে একদিন-
গীতবিতানের সঙ্গে সহবাস ঘটে গেল।
সেদিন মাথায় ভুত চাপল-
এবার তোমার সবকিছু আমায় উজাড় করে দিতেই হবে।
তোমার যা কিছু সব নিঃশেষ করে নেব
লহমার পর লহমায়।


ভুল ভাঙল তারপর-
সেই সহবাস আজ ও চলছে
সুখে, দুঃখে, আর্তিতে, ভালবাসায়
প্রতিদিন তুমি নব নব রূপে, রং এ
ধরা দিয়ে চলেছ, তোমায় নিঃশেষ করতে পারিনি।


না, ছোটোবেলা থেকে যেভাবে তোমাকে
আমি নিংড়ে নিয়েছি বলে ভেবেছিলাম
আসলে তা নয়।


দিনের পর দিন তুমিই আমাকে নিংড়ে নিয়েছ
আমার শৈশব, কৈশোর, যৌবন- বিভিন্ন সত্ত্বাকে,
তাই তো তোমায় ছাড়া আমার
প্রতিটি মূহূর্ত স্থবির, নিস্প্রাণ।


আজ তাই তোমায় ঠাকুর ঘরে খুজিনা
কারণ তুমি আমার মনের মণিকোঠায়
রক্ত-মাংসের জীবন্ত কিংবদন্তী-
আমার প্রেম, আমার রবি ঠাকুর।।