_ কোথায় যাচ্ছ?
-- একটা নদী খুঁজতে
_ নদী দিয়ে কি হবে!
-- নদীর বুকে কান পাতবো,
সেখানে নুড়িতে-পাথরে নুপুর বাজিয়ে জলমাতম চলবে,
সেখানে জলরেখা ছুঁয়ে তোমার হাত দুটি ধরবো।
_ যদি ডুবে যাও, যদি ভেসে যাও!
--- ডুবে গেলে ক্ষতি নেই,
আর যদি ভেসে উঠি, তবে নিশ্চিত
তোমার হৃদ বন্দরেই আমার ডিঙি নৌকা ভিড়াবো।
_ কিন্তু নদী তো নেই! সব বালুচর।
-- তুমি কিচ্ছু ভেবো না, আমি ঠিকই একটা নদী খুঁজে পাবো। তখন দেখবে আমার গায়ে বালুচরের গন্ধ।
_ কোথায় যাচ্ছ?
-- একটা গাছ খুঁজতে।
_ গাছ কেন!
-- দিন শেষে যখন ক্লান্তিরা এসে জুড়ে বসবে মন উঠোনে, তখন আমি সে গাছের কাছে যাবো।
_ গাছ কি তোমার ক্লান্তি বুঝবে!
-- ভেবে দেখিনি। বুঝুক না বুঝুক তাতে কি!
শুধু জানি এখানে রোজ শালিক এসে বসবে, বসন্তী হাওয়ায় পাতাগুলো নেচে যাবে।
_ আর? আরো বলো শুনি।
-- আর পাতার ফাঁকে অস্তমিত সূর্যের লুকোচুরি খেলা মনের ঈশান কোণে অজানা স্বপ্ন এঁকে যাবে।
_ সেখানে আমি কোথায়! আমি তো কোথাও নেই।
-- কে বললো নেই! আছোই তো। এই যে অক্সিজেন হয়ে আমার ভিতর ক্রমাগত প্রবেশ করছো! এই যে গাছের ছায়ারা আমায় আলিঙ্গন করছে ঠিক তোমার শাড়ীর মতন।
_ কিন্তু! গাছ কি আছে এ শহরে!
--- খুঁজেই দেখিনা.... হয়তো থাকবে কোথাও না কোথাও।
_ কি খুঁজছ?
-- একটা পাখি খুঁজছি।
_ তুমি কয়টা পাখি চেনো?
-- কবুতর চিনি। যেটা তুমি পোষ! যেটা তোমার হাত স্পর্শ করে শস্য খায়।
_ তা তো খায়ই। কিন্তু তাতে কি!
-- সেই কবুতর তোমাকে একটুও ভয় পায় না। ছেড়ে দিলেও উড়ে যাবে না। যদিও সে ইচ্ছে মত উড়ে যেতে পারে, তবুও সে তোমার বুকের খাঁচায় বাসা বাঁধবে।
_ আর কোন পাখি চিনো না?
-- চিনি আরো পাখি চিনি। কিন্তু সেই পাখিগুলো আজ আর নেই।
_ তাহলে কোথায় পাবে পাখি?
-- খুঁজেই দেখি না যদি ছোট্ট একটা টুনটুনি কোথাও বাসা বেঁধে থাকে।