নিঃশব্দ বিষণ্ণতায় ডুবে থাকা মনোলোক,
যেখানে স্বপ্নেরা চূর্ণবিচূর্ণ শবদেহের মতো ছড়িয়ে থাকে
অচেতন কিশোর বয়সের সমস্ত আত্মত্যাগের বীজ বপন করেছিলাম
একটা প্রাচীন অরণ্যে, যেখানে কোনো পাখির গান নেই,
শুধু বংশানুক্রমিক আর্তনাদ, বংশানুক্রমিক দাবির নৃশংস গুঞ্জন।

অদৃশ্য শেকলের মতো বয়ে বেড়াই পিতৃছায়ার তুলনামূলক বিষবাষ্প,
যেখানে মা’র ক্রোধ, বাবার উপহাস, শিক্ষককের হুমকি
মিলেমিশে সৃষ্টি করে নরকের একটি ব্যক্তিগত সংস্করণ।
তাদের চোখে আমি ব্যর্থতার পূর্ণচন্দ্র,
তাদের কণ্ঠে আমি অসমাপ্ততার নৈরাশ্যগাথা
তবু প্রতিবারই আমি সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে জেগে উঠেছি,
যেন শবাগারে ফুটে ওঠা এক অদ্ভুত শ্বেতপদ্ম।

সেই শ্বেতপদ্মের গোপন আর্দ্রতায় আমি খুঁজে পেয়েছিলাম
একটা মৃদু ছায়া, এক সমবেদনার স্পর্শ,
কিন্তু সে-ও নীরব অস্ত্রের মতো আমাকে বিদ্ধ করেছে
তার চোখের অতল মায়া, ঠোঁটে রক্তিম বিভ্রম
আমার নিঃসঙ্গ হৃদয়ে সৃষ্টি করেছিল
একটি আশার মরীচিকা, যা অবশেষে ফেটে গেল
নির্দয় নৈঃশব্দ্যের বিষফোড়ার মতো।

আমি একা। সর্বদা একা।
আমার প্রিয় রঙ কেউ জানে না, প্রিয় গান কেউ শোনে না,
আমার অবহেলিত সত্তা কেবল ব্যবহৃত হতে হতে
একটা নিষ্প্রাণ যন্ত্রে রূপান্তরিত হয়েছে
তবু ভিতরে ভিতরে এক প্রলয়োচ্ছ্বাস পুষে রেখেছি।

আমার অস্তিত্বকে যে তুচ্ছ করে দেখেছে,
তারা জানে না এই নীরবতা একদিন অগ্নিঝড় হবে
যেদিন প্রতিটি ঘৃণার বাক্য
প্রত্যাঘাত হবে তীক্ষ্ণ বজ্রের ন্যায়,
যেদিন আমি আর সবার মত তুচ্ছ হব না,
আমি হব প্রথম এবং শেষ, ধ্বংস ও সৃজনের পরম মুখপাত্র।

তাদের বিলাসিতা আমার দরকার নেই,
রঙিন জামাকাপড়, দামি খাবার, কোনো ফাঁপা সুখের প্রতিফলন নয়
আমার চাই প্রজ্ঞার দীপ্তি, হৃদয়ের শান্তি,
যা একদিন আমি আমার রক্তপথে গড়ে তুলব,
আমার কপালে লেখা থাকবে “অদম্য বিজয়”।

যারা বলেছিল
“তুমি ব্যর্থ হবে, তুমি পড়ে যাবে, তুমি হারবে”
তাদেরই চোখে আমি জ্বালাবো এক অগ্নিস্নিগ্ধ অনুতাপ,
তাদেরই হৃদয়ে ফুটিয়ে তুলবো লজ্জার কালো কুসুম।

এই নীরব আর্তনাদ হবে আমার যুদ্ধঘোষ,
অচিরেই শূন্যতার অরণ্য পেরিয়ে আমি দাঁড়াবো
এক মহাজাগতিক বিজয়ের চূড়ায়
আর তখন বিশ্ব শুনবে, আকাশ কাঁপবে,
মৃত তারকারা ফিসফিস করে বলবে

"এই ছিল সেই ব্যর্থ ছেলে যে জীবনের প্রতিটা মুহূর্তে ব্যর্থ হয়েছে,আজ সে বিশ্বজয়ী"