তোমার দিগন্ত ছুঁয়ে যায়, স্বপ্নের অস্পষ্ট রেখায়,
যেখানে আঁধারের মাঝেই দীপ্তিময় এক ক্ষণজন্মা লুকায়।
কালের চূর্ণ-ধ্বনিতে ভেসে যায়, অতল গহ্বরে হারায়,
তব দেখা, হাওয়ার দোলনায় ভুলে যাই স্ব-আলোয় গড়া তলে।
হৃদয়ের শূন্য পটে নতজানু অশ্রুমালা ঝরে,
নীরবতার অন্তরালে বাজে এক অভিশপ্ত বেদনা-সংগীত।
প্রকাশ পায় না, পার হয় না—চোখের বদ্ধ দরজা খুলে,
তুমি এসে থাকো ক্ষণিক; তারপর সুরভিত দূরত্বে বিলীন।
কী যেন ফেলে যায় তোমার নীরব উপস্থিতি, বাণীহীন স্পর্শ,
যার ছোঁয়ায় ম্লান হয় না আমার ব্যথা, বেড়ে যায় অনন্তরাগ।
প্রশ্ন জাগে— কোথায় ডাকি তোমায়? কীভাবে ধরে রাখি আকাশের নীল?
তুমি আছো অমোঘ, কিন্তু আঁধারের মায়ায় হারিয়ে যাই চিরকাল।
আঁখির কোনায় মোহনীয় সেই দৃষ্টি,
অপরাজিত এক দীপশিখা যেন বিদীর্ণ রাতের মাঝে জ্বলে।
কিন্তু হারিয়ে যায় সে দীপ্তি, চোখের পলকে নিভে যায়,
আমার অজস্র আকাঙ্ক্ষার বিক্ষিপ্ত ছায়া হয়ে মিশে যায়।
মনের গূঢ় প্রাঙ্গণে বাঁধি অচেনা কাব্যরাশি,
যা আর কেউ বোঝে না—না বোঝার বেদনাও যেন মধুর।
চিরন্তন ওই অন্তরযন্ত্রণা ছুঁয়ে যায় অদৃশ্য প্রবাহে,
যেখানে প্রেমের সীমান্ত পেরিয়ে সঙ্গী হয় একাকীত্বের বেদনা।
তবুও চাওয়া, পেতে না পারার হতাশা ছাড়া অন্য কিছু নয়,
সেই অমোঘ বাসনা যা হয়তো কখনো পূরণ হবে না।
বিষন্নতার বুননে বাঁধা সেই মিষ্টি বিষাদ,
যা হৃদয়কে জাগায়, দগ্ধ করে এবং চিরদিন স্মরণ করিয়ে দেয়।
যে ভালোবাসা ধূসর রাতের মাঝেও জ্বলতে থাকে,
সে ভালোবাসা, যা হেরে যায় না কখনো, কেবল বদলে যায় রূপ।
তুমি যদি বলো, এক মুহূর্ত হোক আমার কাছে থাকো—
তবু সে এক ছলনা; যে আসে হারায়, আবার ফিরে আসে অদৃশ্য।
এই অদৃশ্য আলোয় বেঁধে রেখেছি আশা ও বেদনার কারুকাজ,
যা ছুঁয়ে যায় অন্তর গভীরে, আর মিশে যায় নিঃশব্দ কাব্যে।
বুকের ভেতর নিভৃতে বাজে, অমলিন এক প্রেমের সুর,
যা কখনো বলে না, তবে অনুভূত হয়—অন্তহীন ও অনন্ত।