কোন গূঢ় হেমন্ত হাওয়ায় আজ প্রাণ চমকে উঠে,
অদৃশ্য বীণায় বাজে যেন এক অজানা সূর-লহরী,
চোখে ধোঁয়ার আবরণ, মনে ধরা-ছোঁয়ার নয়,
তবু হৃদয় ডুবছে এক অনামা আকুলতার ধরি।
কে তুমি দূর ছায়াপথ হতে জাগাও নির্ভুল যন্ত্রণা?
কোন মায়াবী মৌনতার ছন্দে জাগে বাষ্পময় বাসনা?
নয়নের কোণে শূন্য রথ, অন্তঃকরণে গর্জন ব্যাকুল,
আবেশে পরান খোলে অদৃশ্য প্রেমের পাঁজর-মূল।
দিনের জ্যোতি নিভে আসে, গোধূলির গালে ম্লান ছায়া,
কণ্ঠে জমে অব্যক্ত কত প্রলাপের পাথর-ছায়া।
কে বলে প্রেম নীরব— এ যে তো অন্তর্জ্বালার বর্ণমালা,
কণ্ঠরোধ করে রাখে হৃদয়ে রক্তমাখা জ্বালা।
আজি নবদিগন্তে বয়ে যায় অচেনা এক রক্ত-ধারা,
নবযৌবনের পবনে কেন রচে বিষাদ-নিঝরধারা?
দিগন্তে নেই আর ধ্রুবনক্ষত্র—চোখে সবই ধোঁয়াটে,
মনে শুধু ঝড়ের ঘূর্ণি, বেদনায় মেখে ওঠে রাতটে।
বুকের খাঁচায় কাঁপে হৃদয়, জানে না কোন্ আহ্বানে,
শরীরে সাড়া দেয় অদ্ভুত ঢেউ, নামহীন এক গানে।
ধ্বনি নেই, কথা নেই, তবু হাহাকার জাগে নিরবধি,
নিজেকে হারাই নিজের মাঝে, নিঃস্ব হয়ে ফিরি সদা।
কি চাও তুমি হে প্রেত-প্রেম, যে এলি অকারণে,
ধ্বংসের দ্বারে দাঁড়িয়ে বাজাও অনাহুত বাঁশি বারে বারে।
তবুও তোমার পায়ের শব্দে মোহিত এ অন্তর,
তোমার স্পর্শবিহীন সাহচর্যে বাঁচে আজ আমার নীড়ভাঙা ঘর।
বাঁধতে পারি না প্রাণের স্রোত, ছুটে চলে উন্মাদ নদী,
কোন বাঁধনে এই প্রেম বেঁধে রাখে, জানে না ধরা এ কবি।
যাও যদি যাও—তবু রেখে যাও নিঃশ্বাসের ছায়াপথে চিহ্ন,
আমার চেতন অসীমে মিলাক প্রেমের অবিনাশী বিন্য।