কাননছায়া চূড়ায় ধরা,
কে আসে ধীরে ধীরে – অরুণাভ গাত্রে ঝলকে চিরন্তন রেখা?
নবনীরদ কেশে জড়ানো চাঁপাফুলের গন্ধ—
অমেয় অলকবিন্যাসে, যেন নিসর্গ নতচোখে চায় তার প্রসাদ।

ধনুকভঙ্গিমা পদে পদে,
চরণছন্দে জেগে ওঠে মৃত্তিকার মূর্ছনা।
নিস্তব্ধ বনভূমিতে তার অঙ্গুলিনৃত্য বাজায় ছায়া,
শুভ্র গ্রীবায় জপামালার মত ঝোলে কিঞ্চিত করুণ অভিমান।

সে নয়ন নয়—
চিত্রকূট আঁকা জোড়াসাগরের দীপ্তিদান,
অধরে তার চূর্ণিত মধুকর-রাগ,
বক্ষে লুকোনো বসন্তের দুর্বার আহ্বান।

অসামান্যা, অতর্কিত, অনির্বচনীয়,
তার রূপ নন্দনে নত কেয়া, কুরবক, কামিনী।
সে সঙ্গীত না, সে নীরবতাও না—
সে কোনো অন্তর্জাগতিক লীলার নিমগ্ন পরিণতি।

ও সে দূরের, তবু হৃদয়তন্ত্রীতে টানে—
স্পন্দনে, স্তব্ধতায়, ব্যাকুল বার্তায়।
বরণীয়া সে— নয় অলক্ষ্যা—
সে হেমন্তের প্রথম শিশিরকণার মন্দ হাসি।