থেমে যেয়ো না এইখানে, সন্ধ্যা জাগে পল্লব-তলে,
অলীক এক আর্তি যেন বাতাসে কাঁপে শূন্য দলে।
তোমার চোখের আড়াল হতে বেজে ওঠে অন্তরস্বর,
আমার অগোচরে গোপন ব্যথা নেয় ব্যঞ্জনাময় চিত্ররূপ ধর।
কে যেন বলে, তুমি শুনো না—
তবু নিস্তব্ধে স্তব্ধ পথিক হ’য়ে দাঁড়িয়ে থাকো।
তবু ও চোখে আলো কাঁপে, ভাষাহীন দীপ্তি হ’য়ে ঢাকে
আমার সকল বলা-না-বলা শব্দহীন দ্বিধা-ভাষণ।
যখন দূরে থাকো তুমি,
বাতায়নে মেঘের মতন ব্যাকুল এক অলস ভ্রমণ,
মন বলে— “সে বুঝে, সে জানে,”
তবুও নীরবতার বালুকায় বিলীন হয় সব স্বপ্ন-প্রবণ।
তোমার নিকটে এলেই তবে—
ভাষা হারায় ব্যাকুল সুর, ক্লান্ত হয় হৃদয়-অভিসার,
সে কি সংকোচ? না কোনও অপার মাধুরীর ভার?
তবু আজ বলি— তুমি শুনো না, কিন্তু অনুভব করো;
তোমার মৌনতা বুকে আমার এক দহন-দীপ জ্বালে,
সে দীপ্তি অশ্রুর মত বয়ে যায় গোপন স্বপ্নের খালে।
আরও কিছু বলবার ছিল— রয়ে গেল, হারিয়ে গেল,
তবু হৃদয় জানে, সে কথাই ছিল প্রণয়ের শেষ কাব্যশীলন।