আলো ছুঁয়ে যায় গহন দ্বার,
তবু চাবি মেলে না হৃদয়ের অন্তস্থলে,
সেখানেই বাস, অদৃশ্য প্রেমিক—
স্মৃতির পাতায় তোমার রেখা রয়ে যায় অনুলিখিত।
দৃষ্টি টাল খায়—
যখন মনে হয়, তুমি পাশে,
তখনই হাওয়া সরিয়ে নেয় পর্দার অলীক আলাপন।
সুর আসে, সুর যায়,
কিন্তু রাগ মেলে না মনের সরগমে।
তুমি কি আছো মেঘের রঙে, না নিঃশ্বাসের রন্ধ্রে?
কে জানে!
তবু নিশিপারে কাঁপে অন্তঃকরণ,
যেন ঘুমন্ত দেবতা নামছে বুকে—
নামছে, আবার পিছলে পড়ছে শূন্যে।
আমি তো চেয়েছিলাম শুধু একবার,
তোমার দৃষ্টির প্রান্ত ছুঁয়ে ফিরতে—
কিন্তু প্রাপ্তির কণাও মেলে না,
মেলে শুধুই অবিরাম ব্যাকুলতা।
প্রেম?
সে তো আর অর্ঘ্য নয়, যা চাইলেই দেব।
প্রেম তো ছায়া,
যা যত ধরতে চাও, ততই পিছিয়ে যায়।
তুমি বলো না কিছু—
তবু আমি তোমার প্রতিটি নীরবতাকে বানিয়েছি ভাষা।
তোমার না বলা কথা দিয়েই লিখেছি জীবনের গাঁথা।
হায়!
প্রতি নিঃশ্বাসে আমি বিসর্জন দিয়েছি নিজেকে—
বিষয়বৃত্তের সব আলয়-আহ্লাদ,
চেনা জগতের অস্থির সংজ্ঞা,
আর প্রতিটি হাসির অন্তর্লীন পিছুটান।
তবুও তুমি আসো না—
শুধু ছায়া রেখে যাও,
শুধু একফোঁটা নক্ষত্র রেখে যাও আকাশের দরবারে।
আমি ডাকি না আর,
শুধু বসে থাকি প্রহর গুনি,
যেন এক নিঃসীম আরাধনার দেউলে,
শুদ্ধ করে ফেলি প্রেমকে—
নির্ভেজাল, নিরাবরণ, নির্বাক।
হে অচেনা—
যদি কখনো ভালোবাসো,
এসো না শব্দে, এসো স্পর্শে,
এসো এমন নিঃশব্দে—
যেমন জ্যোৎস্না নামে মৃত পাতার উপর,
যেমন বাতাস ছুঁয়ে যায় চোখের কোণে জমে থাকা জলে।