আজ রাত্রির নিমীলিত নীলে
বিষাদের প্রত্যয় জেগে ওঠে—
দিগন্তের অতলান্ত ছায়ায় তুমি যেন
ধূসরতম একটি উচ্চারণে
আমায় ডেকে গেলে শেষবার।

চিনলে কি?
আমি সেই পথিক—
যে সময়ের নিঃশব্দ রথচক্রে
অস্থির পদধ্বনি রেখে
খুঁজে ফিরেছে তোমার অভিসার।

আমার নাম, পরিচয়,
আবরণহীন চিহ্নগুলি সবই
প্রতীক্ষার অগ্নিপূজায় বিলীন,
তবু হৃদয়ের অন্তর্গত গুহায়
তোমার অনামায়া ছায়া অমোচনীয়।

এ যাত্রা নিঃশেষ নয়,
এই বিদায় চিরস্থায়ী নয়,
তবু এক অন্তর্ঘাতিক টান
বুকের নীরব ছায়ায় রক্তিম প্রতিধ্বনি তোলে।

যে আলোক রেখায় তুমি একদিন
আমায় ঘিরে রচেছিলে নক্ষত্রপাশ,
আজ তারই রেশে বাঁধা
এই নির্বাক বিদায়বাণী।

আমি ফিরি না আর সেই চিহ্নে—
যেখানে তুমি একদিন হাত ছুঁয়ে বলেছিলে,
"পথটা দীর্ঘ, কিন্তু দেখবে, আমি আছি…"
হে অনস্তিত্বের প্রান্তরেখায় দাঁড়িয়ে,
আমি সেই কথাগুলিকেই হৃদয়রক্তে লিখে যাই
অক্ষয় কালের বুকপৃষ্ঠে।

তোমার দিকে চাই না,
কারণ জানি—
দূরত্ব নয়,
ভবিষ্যতের প্রতীক্ষাই আমাদের বিচ্ছেদ।

আজ,
নবপ্রভাতের নিঃসঙ্গ কান্তারে
আমার পদচিহ্ন মিলিয়ে যায়
চক্রাবর্তের শ্রান্ত ধূলিতে।
যে আলো একদিন মুখ ছুঁয়েছিল,
আজ সে-ই ছায়ায় বিদায় বলে।

তবু জেনো—
ভবিষ্যতের যে গোপন মুহূর্তে
হৃদয় ব্যথিত হবে নীরব সন্ধ্যায়,
তুমি শুনতে পাবে—
আমার একটি একক দীর্ঘশ্বাস,
উচ্চারিত নিঃশব্দে,
তোমারই নাম।