যে শিক্ষিত যুবক একটি চাকরির জন্য ছুটে বেড়াচ্ছে, চাকরি বিক্রি হচ্ছে প্রকাশ্যে,
গলা তুলে চাতক পাখির মতো সে তাকিয়ে থাকে
মহামান্য বিচারপতির সংলাপে....
যার অন্তরে বিরোধী রাজনৈতিক পার্টির স্লোগান, সংলাপ, প্রতিশোধস্পৃহা  কাঁপিয়ে দেয় আদালত কক্ষ, সংবাদপত্র, সমাজ।
বিচারের বাণী শুধু চেঁচাচ্ছে, তারিখ শুধু তারিখ, ন্যায় আজও অধরা!
সেই সর্বহারা শিক্ষিত আশাহত যুবকের পরাজিত কপালে অদৃশ্য পরাধীনতার শৃঙ্খল ঝনঝন শব্দে বাজে!
সেই দুর্ভাগাদের অশ্রুপাত কি তোমরা দেখেছ!


যে কৃষকের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল মূল্যহীন করে  দেওয়া হয়, ঋণের ফাঁদে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় তার অক্লান্ত পরিশ্রম, অফুরন্ত ঘাম, জমি, কাস্তে....
তাঁর ঝুলন্ত মৃতদেহের দিকে তাকিয়ে
অদৃশ্য পরাধীনতার শৃঙ্খল ঝনঝন শব্দে বাজে,
সেই দুর্ভাগাদের আর্তনাদ কি তোমরা শুনেছ!


যে নারীকে শহরে, গ্রামে, স্কুলে, কলেজে, পথেঘাটে, ট্রেনে, বাসে, অফিসে, গৃহে প্রতিমুহূর্ত দাবিয়ে রাখা হয়, হায়নার দৃষ্টি থেকে নিজেকে আড়াল করে চলতে হয়.....
গৃহবধূর মুখোশে ক্রীতদাসী হয়ে বাঁচতে হয়, স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার পথে অনন্ত বাধায় যে হারিয়ে ফেলে তাঁর শিক্ষা,স্বপ্ন, স্বাধীনতা!
চারদেয়ালে বন্দী সেই মানুষটির ফ্যাকাসে মুখমণ্ডলে অদৃশ্য পরাধীনতার শৃঙ্খল ঝনঝন শব্দে বাজে,
সেই অভাগীদের নীরব কান্না কি তোমরা শুনেছ!


রাষ্ট্রের ষড়যন্ত্রে প্রতিদিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে
ক্ষুদ্র শিল্প, কুটিরশিল্প, খুচরো দোকান, ফেরিওয়ালা....
কলকারখানার শ্রমিক, ক্ষুদ্র মালিকদের অসহায় উদাস দৃষ্টিতে অদৃশ্য পরাধীনতার শৃঙ্খল ঝনঝন শব্দে বাজে,
সেই  অভাগাদের টলমটল পদধ্বনি কি তোমরা শুনেছ!


না তোমরা কিছুই দেখনি, কিছুই শোননি!
দেখেছ ইউটিউবে অশ্লীল ভিডিও, ফেসবুকে অজস্র মহাপুরুষের বাণী, গুলতানি এবং কালো মিডিয়ার রঙিন সংবাদ!


শুনেছ মিথ্যাবাদী নেতা-নেত্রীর প্রতিশ্রুতি, হিরো আলমের বিকৃত রবীন্দ্রসংগীত, রোদ্দুর রায়ের কাঁচা খিস্তি আর স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ, জাতীয় সংগীত!


শাবাশ!  শাবাশ!  শাবাশ!