তীব্র গতির স্পর্ধায় অশ্বমেধের ঘোড়ার মতো
মাটির মানচিত্রের সীমানায় ধুলো উড়িয়ে
গ্রীসের সভ্যতায়, রোমের ইতিহাসে বারবার তোমায় মনে পড়ে
তুমি মোনালিসা নও, নও ক্লিয়োপেট্রা
যে সংস্কৃতির বাধ্যতার আড়ালে সহস্রাব্দ অতিক্রান্ত স্বর্ণগর্ভে
শৈশব কাটিয়ে যৌবন পেলে
অনন্ত মানবিক গুপ্তধনে সিদ্ধ
তুমি সেই মেয়ে ।


বনানীর নিঃসঙ্গ অবকাশে চেয়ে থাকা নীরব বিকালে
নীল আকাশের বুকে সেই গান্ধর্ব বর্ণচ্ছটায়
অজানা স্বর্গারোহণে কতবার হারিয়েছি উৎসব
অনাস্বাদিত তৃপ্তির ব্যাকুলতায় সপ্তর্ষিলোকে বিচরণ
আজও রক্তস্রোতে জাগায়
এক সমকেন্দ্রিক অনুভূতি
অফুরন্ত জীবন-জিজ্ঞাসার উত্তর
তুমি সেই মেয়ে ।


সপ্তসমুদ্র মন্থিত সফেদ হিমশৈলের গা বেয়ে
যখন নেমে আসে এক শ্রুতিপথ, যার বৃত্তান্ত জান তুমি
সেই ধবল শূন্যতার শ্লোকোক্তি রসনা দেখি
ক্ষুদ্র শিলের আমরণ রসায়নে
বেশ লাগে সময়ের বহমান মনোজগৎ
বেদনাপ্লুত নবদিগন্তের হাতছানি
তখন উত্তরিত হও সংঘমিত্রার বেদজ্ঞ ব্যক্তিত্বে
তুমি সেই মেয়ে ।


উদয়দীপ্তির কারুকলায় ছুঁয়ে যায় তোমার করতল
শরতের কাশবনে দিগন্ত প্রসারিত শৃঙ্গাটিকায়
আমার জগৎজয়ী অভিজ্ঞতার নিস্ফল আবেদন
বারংবার বিধিলিপির দরবারে করো উপস্থিত
কর্কটক্রান্তির নীচে দাবিয়ে রাখ কলরব
জীবনচর্যায় বিভাময় সেই আকৃতি
চন্দ্রকরোজ্জ্বল ভ্রুকুটির সনাতন আকর্ষণে
তুমি সেই মেয়ে ।


সূর্যদয়ে মঙ্গলগীতির অনাবিল শুদ্ধতায়
ফোঁটা ফোঁটা শিশিরের নির্বাক আচরণ
আমায় উদ্দীপিত করে তপস্যারত তোমার দর্শনে
কেটে যায় অবিরত স্পন্দন আবেশ
উন্মোচিত জ্যোতির্ময়ীর দিকে চেয়ে দেখি
সর্বোত্তম আশ্চর্য এক সৃষ্টি
তুমি এক সাধারণ
ভারতীয় মেয়ে ।