অনেক অনেক দিন আগের বাস্তব উপখ্যান,  
কোন এক বৃদ্ধ বাবা সঙ্গে নিয়ে তার সন্তান,
এক কাফেলার সাথে তারা উটের পিঠে চড়ে,  
হাজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে একত্রে যাত্রা করে,    
মাঝ পথে হঠাৎ বাবা ছেলেকে তার বলে,
আমি আসছি,তুমি যাও কাফেলার সাথে চলে,
প্রয়োজন শেষে আবার কাফেলায় আসব ফিরে,
কোন ডর-ভয়, চিন্তা করোনা আমাকে ঘিরে।  
এই কথা বলে বাবা নামল উটের পিঠ হতে,
কথা শুনে ছেলে চলতে লাগল কাফেলার সাথে।
কিছুক্ষন পর চারদিকে যখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল,  
ছেলে, বাবাকে কোথাও খুজে নাহি পেল।
ছেলে ভয়ে উটের পিঠ থেকে নেমে পরে,
উল্টা পথে হেঁটে হেঁটে যায় অনেক দূরে।
দেখতে পায় ছেলে অনেক দূর যাবার পরে,
পিতা তার বসে আছে পথ হারিয়ে অন্ধকারে।
দৌড়ে গিয়ে ছেলে তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে,
কাঁধে চড়ালেন বাবাকে অনেক আদর করে।
ছেলে বাবাকে কাঁধে চড়িয়ে কাফেলার পানে,  
হাঁটতে শুরু আবার করল পুত্র আনন্দিত মনে।
আমাকে নামিয়ে দাও আমি নিজে নিজেই যাব,  
সমস্যা আমার হচ্ছে না, হেটেই যেতে পারব।
ছেলে বলল, বাবা কোন সমস্যা হচ্ছে না আমার,    
আমার কাছে সব কিছুর চেয়ে শ্রেষ্ঠ তোমার ভার।
ভাবনা করো না বাবা, এযে দায়িত্বভার আমারি,  
আমি হর্ষ চিত্তে পালন করছি খোদার জিম্মাদারি।  
এতিক্ষনে বাবা সুখে কেঁদে উঠেন আপন মনে,  
বাবার চোখের পানি গড়িয়ে পড়ে পুত্র বদনে।
ছেলে বিষণ্ণ চিত্তে বলল, বাবা কাঁদছ কেন তুমি,
নির্বিঘ্নেই তো যাচ্ছি হেটে, এই দেখছ না আমি।
বাবা বলে, আমি সে জন্য কাঁদছি না, শোন তবে,
আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগে ঠিক এই ভাবে,
আমি কাঁধে বহন করেছিলাম আমার বাবাকে,
হৃষ্ট ছিত্তে আশীর্বাদ করেছিলেন বাবা আমাকে,
তোমাকেও যেন এমন ভালবাসে তোমার সন্তান,  
সেই কথাটির আজ আমি নিজে পেলাম প্রমাণ ।
আজকে আমি দেখতে পেলাম বাবার দোয়ার ফল,
দোয়ার বাস্তব রূপ দেখে রাখতে পারিনি আঁখিজল।


মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম ( সিংগাপুর প্রবাসী)