শিবরাম চক্রবর্তী।বাংলা সাহিত্যের জগতে তিনিই প্রথম বয়ে এনেছিলেন নির্মল হাসির টাটকা বাতাস।ত্রৈলোক্যনাথ অথবা পরশুরামও ছোট-বড় সকলের হৃদয়ে সমানভাবে পৌঁছে যেতে পারেন নি, যেভাবে অবলীলায় পৌঁছে যেতে পেরেছিলেন শিবরাম।
        
        তিনি নিজের নাম লিখতেন শিব্রাম চক্কোত্তি। যিনি নিজেকে নিয়ে এভাবে মস্করা করতে পারেন তাঁর মতো রসবোধ আর কার আছে? জন্মেছিলেন জমিদার বংশে, তাই আভিজাত্য আর দিল দরিয়া ভাবটা থেকে গিয়েছিল রক্তে।সাহিত্য চর্চা শুরু করেছিলেন কবিতা দিয়ে।ছাত্র বয়সেই একটা কবিতা লিখে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন 'প্রবাসী' পত্রিকায়।কিন্তু সম্পাদক চারুবাবু সেটি ফেরত পাঠিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে  শিবরাম লিখেছিলেন, কবিতাটি ফেরত এলো, সঙ্গে এলো চারুবাবুর চিরকুট, তাতে লেখা, 'এই বয়সে তোমার কবিতা ছাপিয়ে তোমাকে মাথায় তুলতে চাই না, এখন মন দিয়ে পড়াশুনা করো।'


        'চারুবাবুর চিরকুট' এ ধরণের কথার কারুকাজই ছিল তাঁর হাস্যরস সৃষ্টির চাবিকাঠি।আর ছিল ঘটনার অসাধারণ মোচড়।এই দুটি বৈশিষ্ট্যই ছিল তাঁর গল্পে রম্যতার মূল উপাদান।ছিল না কোন ভাঁড়ামি বা অশ্লীল রসিকতা। ফলে ছোট-বড় সকলের কাছেই হয়ে উঠেছিলেন সমানভাবে গ্রহণীয়।


         আজকের এই গোমড়ামুখো আত্মকেন্দ্রিক মানুষের ভিড়ে তাঁর কথা যেন বেশি বেশি করে স্মরণ করতে ইচ্ছে করে।