নিশুতি রাতে
প্রধান সড়ক ছুঁয়ে গলির মাথায়
পুরনো দালান বাড়ি,
যেখানে থাকি,
রাত কাটাই আরকি।
দোতলার চিলেকোঠায়
বাড়িওয়ালার দূটো পয়সার আশায়,
খোলা ছাদে টিনের চালা
তারই একটায়,
এই ব্যাচেলর ফেরিওয়ালা।
নীচের তলায় ভাড়াটিয়ার বাথরুম শেয়ার,
আর শস্তা হোটেলের ডালরুটি,
চিন্তা নেই খাওয়া দাওয়ার।
সারাদিনে হাজারটা মিথ্যা কথার
ফুলঝুরির কারিশমায়
ভূয়া মলম বেচি,
বলা যায় পুরাটাই লাভ,
গরীবের সস্তা রূচি,
তাই বলি ভালোই আছি।
যাইহোক যা বলছিলাম,
ফিরে আসি,
সারাদিনের ঝক্কি,
মানে এই হাঁকাহাঁকি, ডাকাডাকি,
রিকশার ভেঁপু, ছোট বড় গাড়ির হর্ণ,
মাঝে মাঝে গলির মাথা,
কোন বড় গাড়ি ঢুকে পড়া,
ভয়ঙ্কর সে কী অবস্থা।
গভীর রাতে,
মোটামুটি বারোটা কি একটা বাজে,
যখন থামে,
সারাদিনের গলাবাজি আর এই ঝামেলা,
ফুলে ওঠা প্রতিবাদি শিরাগুলো
ভ্রুকুটি দিয়ে দম ফেলে।
তখন স্বভাবতই ঘুম আসে,
কিন্তু ব্যাতিক্রমী মাঝে মাঝে
বিছানায় শুয়ে, ঘুম না এলে
খোলা জানালা দিয়ে
চোখে পড়ে, রাস্তার ওপার,
নিত্য দিনের মতো আজোও
ফুটপাতে শুয়ে
রীতিমতো একটি পরিবার।
অন্যদিনও দেখি, কিন্তু ভাবিনি একবার।
কী আশ্চর্য!
চাল নেই, চুলো নেই,
নেই মানবিক প্রয়োজন মেটাতে উপায়।
স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক
স্বাধীনতা নিয়ে রাস্তায় ঘুমায়।
হয়তো আমার মতোই
নেই কারো এক পলক সময়।