খোয়াব দেখিয়া খলিলুল্লাহ
ত্রস্তে উঠিয়া বলে
কী খোয়াব দেখিলাম আমি
নিশি পোহাবার কালে।


কোরবানি দিতে বলিলেন আমায়
মহান আল্লাহর রাহে,
উষ্ট্র কোরবান দিলেন খলিল
প্রভাতে উঠিয়া আগে।


পরদিন রাতে একই আদেশ
আবার স্বপনে আসে,
"ইব্রাহিম কোরবানি কর তুমি
তোমার প্রভু যা যাচে"।


ভাবিলেন খলিল হয়নি কবুল
একশত উটের কোরবান,
আজকে আবার জবেহ করিব
তিনশত উষ্ট্র পরিমাণ।


পরদিন রাতে দেখিলেন আবার
সেই স্বপন সেই ক্ষণ,
কোরবানি দাও সবচেয়ে প্রিয় কী
তোমার দুনিয়ায় বিদ্যমান।


গভীর হইল চিন্তার রেখা
বয়স রেখার সাথে,
কোন ইশারা দিলেন আল্লাহ
কলিজা কাঁপিয়া ওঠে।
বৃদ্ধ বয়সে যে দান আমায়
করেছেন আল্লাহ মহান,
স্রেষ্ট সম্পদ সে যে আমার
ইসমাইল প্রিয় সন্তান।


ঈমানের বলে বলীয়ান খলিল
বক্ষ চাপিয়া ধরে,
বলিলেন আমি তাই করিব
খোদার প্রেমের তরে।
যে মালিক আমায় দান করেছেন
তিনি যদি তাই চান,
সাধ্য কি আমার বিরত রহিব
থাকিতে আমার প্রাণ?


বাঁধন ছেড়া কষ্ট চাপিয়া
মস্তকে হাত রাখি,
বলিলেন বৎস তোমাকে বলিতে
বক্ষ যেতেছে ফাটি।
মালিক আদেশ দিয়েছেন মোরে
দিতে হবে কোরবান,
আল্লাহর বান্দা হও যদি তুমি
তোমায় দিতে হবে প্রাণ।


যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তান
অমনি উঠিয়া বলে,
আল্লাহর আদেশ পালনে আপনার
বিলম্ব কিসের ছলে?
জীবণের মালিক জীবন নিবেন,
মঙ্গল হবে নিশ্চয়,
জলদি আয়োজন করেন আপনি
আমার আপত্তি নাই।


মহা বিষ্ময় ছড়ালো জগৎময়
থমকে দাঁড়ায় সবে,
সৃষ্টির সাথে স্রোষ্টার খেলা
কী জানি কী হবে।


জোরসে ছুরি চলালেন খলিল
গর্দান লক্ষ্য করে,
গর্দান কেটে দুই ভাগ হলো
লোহু পড়িল ঝরে।
আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হলো
আল্লাহু আকবর রবে।
চক্ষু খুলিয়া বিস্মিত খলিল
একি হয়েছে হায়,
দুম্বা একটা কোরবানি হয়েছে
ইসমাইল দাড়িয়ে বায়।


সেজদায় পড়ে ইব্রাহিম বলে
আয় খোদা দয়াময়,
তোমার কুদরত বুঝিব আমি
আমার সাধ্য নয়।


সেই থেকে আজও মুসলিম জাতি
রাখিতে পিতার সম্মান,
আল্লাহর রাহে দিয়ে থাকে তাঁরা
হালাল পশু কোরবান।