ভোরের অন্ধকারে হঠাৎ ফেটে পড়ে এক আলোর ডাক—
আজান!
সেই চিরচেনা, হৃদয়-ভাঙা সুর
যেন কোনো প্রাচীন প্রেমিকের কান্না,
যার প্রতিটি শব্দে জেগে ওঠে হৃদয়ের সমস্ত অনুভব।
“আল্লাহু আকবার…”
এই উচ্চারণে আমার বুক কেঁপে ওঠে।
এই পৃথিবীর সমস্ত গর্জন,
সমস্ত ব্যস্ততা, সমস্ত ক্লান্তি
এক মুহূর্তে থেমে যায়।
মনে হয়—
যেন কোনো অদৃশ্য হাত
আমাকে টেনে নিচ্ছে আলোর দিকে,
অভিমানে ঢেকে যাওয়া জীবনটাকে
ফের জাগিয়ে তুলছে নতুন প্রার্থনায়।
“হাইয়া আলাস সালাহ”—
কান্নার মতো কোমল, আদেশের মতো দৃঢ়।
কতদিন যেন ডেকেছে সে—
কিন্তু আমি ব্যস্ত ছিলাম, উদাস ছিলাম,
অথচ সে কখনো ক্লান্ত হয়নি।
পৃথিবীর সমস্ত নীরবতার ভেতরেও
সে উচ্চারণ থেমে যায় না!
আজান শুধু ডাক নয়,
এ এক প্রেমপত্র—
রবের কাছ থেকে
তাঁর প্রিয় বান্দাদের উদ্দেশ্যে লেখা।
এ এক আহ্বান—
যেখানে শব্দ নয়,
আছে আলোক, আছে আশ্রয়, আছে শান্তি।
আমি কাঁদি…
কারণ জানি,
এই আজান একদিন থেমে যাবে আমার জন্য।
একদিন আর কেউ বলবে না—
“কুমু ইলাস সালাহ” আমার কানে।
তখন আমি থাকব মাটির নিচে,
নীরব, নিঃসঙ্গ,
কিন্তু হয়তো তখনও দূর কোনো মিনারে
ভেসে আসবে সেই পবিত্র শব্দ—
আজান…
আর আমার আত্মা তখনও হয়তো কেঁপে উঠবে
রবের সেই চিরন্তন ডাকের দিকে!