আকাশ তখন কেবল জেগে উঠছে।
রাত্রির শেষ অশ্রু যেন জমে আছে আকাশের গায়ে,
আর সেই অশ্রু-ঝরা আলোর ভেতর দিয়ে ভেসে আসে মসজিদের মাইকে ফজরের আজান।
আল্লাহু আকবার…
প্রতিধ্বনি নয়,
এ যেন আত্মার কোন গহীন গুহায় পড়া এক আলোক-স্পর্শ।
আমি উঠে দাঁড়াই।
ঘুম আর জাগরণের সীমারেখা পেরিয়ে,
জলের স্পর্শে শুদ্ধ হই—
নয় কেবল শরীর, শুদ্ধ হয় ভিতরটা।
তখন আমার চারপাশ নিস্তব্ধ,
কিন্তু আমার ভেতরে জেগে ওঠে এক আশ্চর্য আলো।
সিজদায় মাথা রাখা মানে পৃথিবীর নিচে চলে যাওয়া নয়,
বরং চেতনার শিখরে ওঠা।
ফজরের সেজদা—
এ এক প্রতিজ্ঞা,
আজকের দিনটা হবে আল্লাহর নামে,
পরিচ্ছন্ন, ধৈর্যশীল, আর আত্মতৃপ্ত।
ফজরের নামাজ শেষে যখন বাইরে বের হই,
তখন দেখি, চারপাশ আলোর গায়ে মেখেছে ধূসর রঙ।
পাখিরা ডাকছে, পাতার ওপর শিশির, বাতাসে ফুলের ঘ্রাণ।
এমন প্রশান্তি দুনিয়ার কোথাও নেই—
কারণ এই প্রশান্তি আসে গহীন আসমান থেকে,
একটি সত্যিকারের মিলনের পর।
ফজর মানে কেবল দিনের শুরু নয়,
ফজর মানে এক শুদ্ধতা,
যা রক্ষা করে আমাকে দিনভর কলুষ থেকে।
যে ফজর আমাকে শেখায়—
যতই ক্লান্তি থাক,
আল্লাহর ডাকের আগে আমার কোনো অধিকার নেই ঘুমিয়ে থাকার।
প্রশান্তিময় ফজর—
এই নামাজ, এই আলো, এই বাতাস,
এ যেন জান্নাতেরই এক ক্ষণিক পূর্বাভাস।