কাঁধে জোলা, মুখে কালি, এই যে ছেলে রাসু,
কোন মায়ের তুই যাদুমনি একটি টোকাই শিশু।
পথের ধারে ঘুমাস কেনে, কোথায় মায়ের কোল,
ফেলফেলিয়ে দেখছিস কি রে, কোথায় মুখের বোল।
শিতল পাটি, নরম খাটি, নেই কি রে তোর মনে,
কেমন করে রাতটা কাটাস বরষা বাদল দিনে।
কঁচি মুখে ভয় কেন আজ, কোথায় চপল হাসি,
দিকবিদিগে হয় কি ছোটা, রঙিন বেলুন, বাঁশি।


কোথায় গো তোর ঘর রে বাছা! কোথায় মায়ের আঁচল,
অমন ডাগর চোখের কোনে কে পরায় তোর কাজল।
মরছো পুড়ে জ্বরের তাপে, কোথায় মাথার ছাঁয়া,
কেউ দাঁড়াবে থমকে পাশে, কার আছে সে মায়া।
চুলগুলো তোর রুক্ষ দারুন, হাড়গুলো যায় গোনা,
এক কাপড়ে গোসল ছাড়া, নাই কত দিন জানা।
ছয় বেলা এই যাচ্ছে কেটে, তাও জোটেনি পেটে,
আয় খাওয়াব, আমার সাথে একটু গেলে হেঁটে।
ভাত খাবি না, মাছ খাবি না, খাবি তবে কি,
সরষে ইলিস, রূপচঁদা, রুই, দদি, মাখন, ঘি।
চাসনে কিছু অনেক খানা, সামনে আছে রাখা,
এমন কি আর খুব প্রয়োজন, নিতিস কুড়ি টাকা।


“গলাব্দি খেলেও জানি লাগবে ক্ষুধা ফের,
কুড়ি টাকার অল্প নেশায় বেহুশ থাকব ঢের।”


সারা পথে ওর কথাটাই খেলছে মাথায় ভারী,
সমাজপতি দেশে কত বাবু অধিকারী।
ছোট্ট মনের ছোট্ট প্রশ্ন আছে কি কার জানা,
দুই বেলা হোক, তবু রুচুক ওদের রোজই খানা।
কিসের তরে রাজ্য, রাজা, কিসের তরে দেশ,
আগামীর দিন পথের পরে হয় যদি গো শেষ।
                      ***