সে এসে পড়বে। খুব শীঘ্রই সে এসে পড়বে
বিদ্যুৎ গতিতে বাধাহীন ক্ষিপ্রতায়।


মাঠের পর মাঠ পাকা ধান ।
নষ্ট হবার অলিখিত অস্থির আতঙ্কে
আল ধরে দ্রুত হাঁটছে কৃষক- কৃষাণীরা ।
সারাবছরের রসদ বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা ।
কেউ ধান বাঁধছে । কেউ ধান আঁটি করে
মাথায় গামছা বেঁধে নিয়ে আসছে বড় রাস্তা পেরিয়ে,
খাল পেরিয়ে, সাঁকো পেরিয়ে,
বাড়ির গোবর নিকানো খামারে ।


রোদের চোখ রাঙানো এখানে এখন তুচ্ছ।
ঘামের প্রতিটি ফোঁটা এখন অক্ষর হয়ে
যাপিত জীবনের বুকে রাখছে
জীবন সংগ্রামের স্বাক্ষর ।  বিশ্রাম' শব্দটি এখানে
যেন তার অস্তিত্ব হারিয়ে
ফসিল হয়ে ঘুমাচ্ছে অভিধানের পাতায় ।


সে এসে পড়বে । খুব শীঘ্রই এসে পড়বে  
ক্ষ্যাপা ষাঁড়ের মতো উন্মত্ততায় ।


কেউ ঘরের চালা উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার ভয়ে
শক্ত করে বাঁধছে দড়ি ।  খুঁটিতে পুঁতছে পেরেক ।
ধানের গোলায় ঢাকছে ত্রিপল । কেউ তালগাছের
গা থেকে চটপট ছড়াচ্ছে লেধি দেওয়া ঘুঁটে ।।
কুড়িয়ে নিচ্ছে রোদে শুকাতে দেওয়া
কাঁচা আমের ফালি। ভরে নিচ্ছে টিউকল থেকে
পানীয় জল। বাচ্চারা বড়দের নিষেধে
ঘর বন্দি, পাতা না নড়া গাছের মতো চুপচাপ ।
রাস্তার উপর কুকুরগুলো একসাথে দাঁড়িয়ে।
হাঁসের দল সারি বেঁধে ফিরে আসছে পাড়ে ।
পাখিরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে ঘুরছে বাসার আসে পাশেই ।
ফড়িং-রা চক্কর কাটছে আকাশে।
দাওয়ার উপর দন্তেন্যর মতো মাথা নিচু করে
উবু হয়ে বসে থাকা এক অসুস্থ বৃদ্ধ কৃষক
রেডিওতে শুনছে আকাশবাণীর খবর―
সে আসছে । সে আসছে । জীবনের বুকে
আছড়ে পড়তে তার আর বেশি বাকি নেই ।


(@ঝড়ের মুহূর্তে সবাই সাবধানে ও সতর্ক থাকুন । )