ছয় বছরের মেয়েটি ম্যাজিশিয়ানের মতো
রিং-এর ভেতর শরীর গলিয়ে হাঁসবাচ্চার মতো
ডিগবাজি খেতে খেতে চলে গেল পরের কামরাতে ।
কিছু খাবে বলে পেতেও ছিল―
ফুলের পাপড়ির মতো তার নরম দুটি হাত ।
নাহ! আপনি দুটো টাকা দিলেন না তাকে ।


পঁয়ত্রিশের লোকটির এক পা খোঁড়া।
একটা দাঁড়া ভাঙা কাঁকড়ার মতো এক হাত তুলে
ঘসড়াতে ঘসড়াতে এসে অভাবের আগুনে সেঁকা
শুষ্ক মুখে বলল―
"দাদা-ভাইয়েরা দয়া করে কিছু সাহায্য করুন ।"
―নাহ ! আপনি দুটো টাকা দিলেন না তাকে ।


পয়ষট্টির বৃদ্ধাটি এক হাতে লাঠির সাথে
ধরা ময়লা লাইলন ব্যাগ । কাঁধে ছোট্ট পটলা ।
আহতের মতো করুণ চোখে তাকিয়ে  বলল―
'বাবা কিছু সাহায্য করুণ ।'  
নাহ! আপনি না দেখার ভান করে চোখ রাখলেন
কোলের উপর ধরা স্বামীজীর ছোট্ট পুস্তিকার উপর ।
অথচ দুটো টাকা দিলেন না তাকেও ।


আপনি এবার ট্রেন থেকে নামলেন।
সোজা হাঁটা দিলেন হাওড়ার ব্রিজ-এর উপর ।
অথচ যেতে যেতে―
একটা দু-টাকার কয়েন ঢিল ছোঁড়ার মতো
জোর করে ছুঁড়ে দিলেন গঙ্গায় বুকে ।
আর মনে মনে প্রণাম ঠুকে বললেন ―
ঠাকুর ভালো রেখো।'


অথচ কাকাবাবু, এখনো আপনার পরমধর্ম―
জীব সেবাই শিব সেবা ।