ক্লান্ত পথিকেরা একটু প্রশান্তির খোঁজে এখানে আসে,
ক্ষণিক সময় বিশ্রাম নিয়ে চলে যায় অবশেষে।
এখানে কেহ থাকতে আসেনি, মুসাফির নাকি সকলে,  
যাবার তাড়া আছে তাই একে একে সকলে যায় চলে।
আবার কেও আসে পথিক সেজে, আসলে পথিক নয়,
থাকে ততক্ষণ, মনে চায় যতক্ষণ কাটাতে সময়।
মান অভিমান আর রাগ অনুরাগের খেলা শেষে,
রাতের আঁধারেই যায় তারা মিশে!
আবার কিছু পথিক ভাবে যাত্রার মাঝে সীমিত ক্ষণে,
একটু আধটু ভালোবাসা নাই বা হলো এখানে।
প্রতিদিন কত পথিক আসে আর যায়, হয় না তার গণনা,
পথিক বিহীন কখনোই থাকে না এ ‘সরাইখানা’!
‘সরাইখানা’র দেয়ালে কিছু ভালোবাসার ছবি আঁকা আছে,
মনে হয় আনাড়ি হাতে এঁকেছে কেও আবেগের বশে।
ছবিগুলো বড়ই মলিন, অস্পষ্ট তবুও কত কথা যে বলে,
দিন তারিখ লিখা নেই, হয়তো লিখেনি মনের ভুলে।
প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির হিসেব মেলাতে এখানে কেও আসেনা,
কি পেলো আর কি পেলো না তা নিয়েও কারো নেই ভাবনা।
প্রেমিক পথিক শুধু জানে তাকে যেতে হবে কোথায়,
এখানে থাকাটা ক্ষণস্থায়ী সহসাই হয়ে যাবে বিদায়ের সময়।
অথচ তার প্রেয়সী জানলেও মানতে চায় না সময়ের সীমানা,
বুঝতেই চায় না এখানে বেশি দিন থাকা যায় না, এ যে ‘সরাইখানা’!                                                
এখানে আছে হাসি আনন্দ, মৃদু মন্দ বাতাস আর ঝরনার ছলছল ধ্বনি,
ছায়াঘেরা বনে শোনা যায় রাত জাগা পাখির পাখা ঝাপটানি।
পূর্ণিমা চাঁদের সাথে চলে মেঘের লুকোচুরি,
ফুলের গন্ধে মাতাল হয়ে অবিরাম নাচে একদল নীলপরী!
এমনি পরিবেশে চলার পথে এখানে এসেছিলেন একজন কবি,
তিনি আবার চিত্রশিল্পী, শখের বসে আঁকেন হরেক রকম ছবি।                                        
বিশ্রাম নিবেন বলে কবি এখানে কিছুটা সময় ছিলেন,
ভোর হবার আগেই আবার নিরবে নিভৃতে চলেও গেলেন।  
মনে বড় কষ্ট লাগে অচেনা সেই কবিকে নিয়ে ভাবতে গিয়ে,
যিনি থাকলেন, দেখলেন আর উপলব্ধি করলেন সবকিছু হৃদয় দিয়ে।
অথচ সব উপাদান থাকা সত্ত্বেও কবি লিখলেন না একটি কবিতা,
আঁকলেন না কোন 'তৈলচিত্র' যাতে প্রকাশ পেতো ‘সরাইখানা’র বাস্তবতা।