আমি ক্রমেই যাচ্ছি চলে মরণের দিকে,
এ চলা মোর হয়েছে শুরু জন্মক্ষণ থেকে!
দুই চোখে ধরণীর মুখ দেখেই প্রথম,
বাঁচার অধিকারে হয় শুরু কান্নার মাতম।
সেই অসহায় কাল থেকে মরণকে ভুলি,
‘বাঁচবো আরো কিছুকাল’ এ কথাটি বলি।
আমার অধিকার দিতে কেন এতো গড়িমসি,
কত আকুতি করে যাচ্ছি আজও দিবানিশি।
আমার পাওনাটুকু শুধু আমাকে দিয়ে দাও,
চাইনা একটুও বেশি বাকীটা তোমরা নাও।  
বাঁচার জন্য চাইছি আমি দাওনা কিছু মোরে,
আছে অফুরান সবার কাছে এ দুনিয়া ভরে।
জানি সুখশয্যা হবে না মোর কোনদিন,
কতকাল বাঁচবো বলো, সময় যে বড়ই ক্ষীণ!
ক্ষণিকের তরে এসেছি ভবে, যাব সহসা চলে,
চিরকাল কেন দু:খ পাবো জনমদুখী বলে?
ক্ষুধা নিবারণে পাইনি অন্ন তোমাদের এ ভবে,
দিচ্ছ ফেলে উচ্ছিষ্ট কত নিত্য তোমরা সবে।
আমি আজও ঘুরি তোমাদের দ্বারে দ্বারে,
জঠর জ্বালা নিয়ে ঘরে ফিরি সারাদিন ঘুরে।
ডাস্টবিনের কাছে ন্যাড়া কুকুরটা আর আমি,
থাকবো আর কতকাল তা জানেন অন্তর্যামী!
আজীবন চেয়েছি, তবুও তো তোমাদের হৃদয় নাহি টলে,
তাকাওনি ফিরে একটিবারও, যাচ্ছ কেবলই পায়ে দলে।
সারাটা জীবন যাচ্ছি বলে দাওনা কিছু মোরে,
চির বুভুক্ষু জনমদুখী আমি এ দুনিয়ার পরে।
মরনেরে আজও পাইনি খুঁজে করবো যে আলিঙ্গন,
বুকের কষ্ট বুকে নিয়ে হতাম নিরুদ্দেশ আজীবন!
আকাশের চাঁদ যেন ‘ঝলসানো রুটি’, পৃথিবীটা ‘গদ্যময়’,
সুকান্ত বাবু তুমি যেমনটি বলেছিলে, তা এখনও মনে হয়।    
চির অবহেলিত হয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবো দূরে,
তারপরও আমার হাজারো স্বজন, থাকবে দুনিয়া জুড়ে।