আজ যদি আমার হাতে একটা অস্ত্র উঠে আসে,
বুলেটগুলো থাকে শুধু হুকুমের অপেক্ষায়।
তখন, থানার দারোগা বাবু,
কালোবাজারী শিকদার সাহেব,
কপালে দাগ পড়া কোন এক ধর্মাবতার!
একাত্তরের সুুবিধাভোগী কথিত দেশপ্রেমিক,
চোখগুলো কপালে তুলে কি বলবে জানো?
তারা সব কজন নিজ নিজ চরিত্রে উঠবে জ্বলে,
দৌড়ঝাঁপ শুরু করবে স্ব স্ব আস্তানা থেকে।
মুখে ফুটবে আইনের যত সব খড়গ,
ভুলেও যেন হরণ করা যাবে না কারো ব্যক্তি স্বাধীনতা!
অথচ, আজ যদি সালটা একাত্তর হতো
আর আমি হতাম একজন মুক্তিযোদ্ধা,
তাহলে তারাই আমাকে জানাতো অভিবাদন।
একাত্তরে বুঝিনি আমি অস্ত্রের ভাষা,
জানি নি কান্নার অভিব্যক্তি ছিল কত নিষ্ঠুর!
চোখের ভাষায় ছিল না আগুনের কোন জ্বালা,
বুঝতে পারিনি মা-বোনের সম্ভ্রম হারানো বেদনার কথা।
এতদিন পরে সব জেনে গেছি আমি,
সে দিন কি ঘটেছিল বাংলার সবুজ বুকে।
তোমরা না হয় ভুলে গেছো সব,
আমি তো ভুলবো না আর সহজে।
আজো কলিম শেখ পুত্র শোকে কাতর,
রহিমা তার স্বামীর জন্য নীরবে অশ্রু ঝরায়।
আমি আমার মা-বোনের কথা ভাবি,
কোটি কোটি বাঙালির মতো।
সূর্যটা যেমনি উঠে প্রতিদিন তেমনি করে,
বারবার মানস পটে ভেসে উঠে সে একাত্তর
জ্বলন্ত বাংলার প্রতিটি জনপদ।
তাই আজ কেন জানি কোন বেদনায়,
কোন দৃশ্য দেখে দেখে
একটা অস্ত্র স্বপ্নে দেখি আজকাল।
সে হাতছানি দিয়ে ডাকছে আমায়,
আর বলতে থাকে প্রস্তুত হও হে যুবক!
বাংলা মায়ের এ দুর্দিনে আমাকে নিয়ে,
তুমি গর্জে উঠো আরেকবার!
জানি, এটা শুধু একটা স্বপ্নই আমার,
তারপরও বাস্তবে স্বপ্নের সে অস্ত্রটাই হোক আজ,
সকল শোষণ, দুঃখ, লাঞ্ছনা ঘোচানো ‘মানবতার অস্ত্র’।