হে মানুষ;
কেন থমকে গেলি আজ?
কোথায় তোদের বৈভব বিত্তভরা অহম সিন্দুক?
কোথায় তোদের যুদ্ধবাজ বিলাসীতা?
কোথায় তোদের সাবমেরিন মিসাইল এটম সাজোয়াযান?
কোথায় তোদের যুদ্ধবাজ সৈন্যদল, কামান ট্যাংক ড্রোন গোলাবারুদ,
কোথায় পারমাণবিক, হাইড্রোজেন আর ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র?
কোথায় তোদের মোড়লগিরীতা?
সামান্য অদৃশ্য জীবাণুর ভয়ে,সব ফেলে কেন আজ গৃহকোণে নির্বাসিত ?
তোমার ওই প্রোটেকটেবল অট্টালিকা পারবে কি মৃত্যুকে ঠেকাতে ?
তোমার ওই দৌলত পারবে কি মৃত্যুক্ষুধা মেটাতে ?
তোমার ওই যশ খ্যাতি আর রক্তচক্ষু,
পারবে কি তোমায় অমর করতে?
তোমার ওই বাহুবল, রাজপ্রাসাদ আর ক্ষমতার বলয়
পারবে কি মৃত্যুর জীর্ণতা ছিঁড়ে দিতে?
জানি,পারবেনা,
ওসব মেকি দম্ভ স্রষ্টার কাছে খাটেনা।
তবে কিসের এতো অহংকার  ?
তবে কেন এতো রক্তের স্রোতে লিখে যাও নিমর্মতার বিষাক্ত ইতিহাস ?
কেন জুলুম আর অত্যাচারে লুটে নাও দুর্বলের আহার্য, অবলার সম্ভম ?
কেন ভুলে যাও তুমি, তোমার স্রষ্টাকে
কেন ভুলে যাও তুমি নৃপতি নও,
তুমিও তারই গোলাম।
কেন ভুলে যাও,
যেখানে এসে মিশে যায় সকল ধন দৌলত দম্ভ অহমিকা
মিশে যায় রাজা প্রজা উজির নাজির চর্মকার
মিশে যায় সকল ধনী গরীব কুলীন কুলটা,
মিশে যৌবন বার্ধক্য জরা ধ্যান জ্ঞান দৌরাত্ব আধিপত্য,
কেন ভুলে যাও,
সেখানে তোমাকেও মিশে যেতে হবে, মোহনায় আমিত্ব বিলীন হওয়া নদীর মতো।
কেন ভুলে যাও,
তুমিও মিশে যাবে মৃত্তিকার ত্রিস্তরে
কালের গহ্বরে,
কেন ভুলে যাও তোমার শেষ পরিণাম
মৃত্যু
মৃত্যু
এবং মৃত্যু।


ভেবেছো কি স্রষ্টা ওসব দেখেনা?
ভেবেছো কি স্রষ্টা দেখেনা চীনের প্রাচীরের ওপাশে কি ঘটে,
কি ঘটে সিরিয়ায় ইরাক ইরান প্যালেস্টাইন কাস্মীর ইয়েমেনে,
কি ঘটে আবু গারিব, গুয়েন্তনামো কারাগারে,
কি ঘটে ভারতবর্ষে,
কি ঘটে স্বর্গ মর্ত পাতালপুরে?
ভেবেছো কি স্রষ্টা দেখেনা, মসজিদে রক্তের স্রোত কোরআনে আগুন?
রাসূলের অবমাননাকর কাটাক্ষ ব্যাঙ্গচিত্র নিয়ে পাশ্চাত্য অপসংস্কৃতির অপদৌরাত্ব?


ভেবেছো কি স্রষ্টা বধীর?
ভেবেছো কি স্রষ্টা শুনেনা, মজলুমের আত্মচিৎকার
দুর্বলের বোবা কান্না
বোমার আঘাতে অন্ধ হয়ে যাওয়া শিশুর অন্তিম আরতি?
ডাস্টবিনের পলিথিনে মুড়ানো স্বীকৃতিহীন নবজাতকের গগনবিদারী ক্রন্দলরোল?


যদি ভেবে থাকো স্রষ্টা নেই , তবে জেনে রেখো,
সিন্ধুর ফটিক জলের চেয়েও সহস্রগুণ স্বচ্ছাব্রু মানুষের মাঝে তার।
তিনি সর্বজ্ঞ,
তিনি চিরঞ্জীব,
তিনি মহীয়ান গরীয়ান সর্বশক্তিমান,
তাহার রুষ্টতা দেখার, ধৃষ্টতা দেখিও না মানুষ।


তুমি পারবেনা কখনো সময়কে বেঁধে রাখতে,
তুমি পারবেনা কখনো অনন্ত যৌবনা হতে,
তুমি পারবেনা কখনো ধরিত্রীর চির রাজত্ব করতে,
তুমি পারবেনা কখনো সামান্য মৃত্যুকে রুখে দিতে।
তবে কিসের এতো দম্ভ দেখাও,
কিসের বাহাদুরি,
চলো সব ভেদাভেদ ভুলে নতুন সভ্যতা গড়ি,
মানুষ মানুষকে ভালোবেসে, চলো স্রষ্টার আরাধ্য করি।


-