একাত্তুরে স্বামী হারিয়েছি, শেষ দেখাও হয়নি,
হারিয়েছি সম্ভ্রম ভিটে মাটি।
বুকের মাঝে তবুও আগলে রেখেছি দুটি মানিক।
ভেবেছি স্বাধীন দেশে ওরা তরতরে বড় হবে,
ওরাই হবে একদিন এ স্বাধীন জাতির কর্ণধার।
চুয়াত্তুরের নির্মম আকাল,
দানব হয়ে এসেছিল আমার ঘরে।
ক্ষমতার দাপটে শোষণে শোষণে স্তব্ধ হয়েছিল স্বাধীনতা।
ওরা শুষে খেয়েছিল আমার মানিকের রক্তমাংস,
শুষ্ক স্তনে রক্তও আসেনি।
যৎকিঞ্চিত রিলিফ,
অসহায় চোখে ফ্যালফ্যালিয়ে তাকিয়ে থাকতো,
আমার মানিক,
লুটেপুটে নিয়ে যেত মহজনরা।
অতঃপর ডাস্টবিনের নোংরা উচ্ছিষ্টই হতো শেষ আহার্য।
ক্ষুধার দানব তবুও ছিনিয়ে নিলো
বুকের মানিক।
অসহ্য যাতনা ঘৃণা আর অবজ্ঞা নিয়ে আজো বেঁচে আছি
বীরাঙ্গনা হয়ে চুয়াল্লিশ বছর !
ক্ষুধার দানব আজও স্বাধীন দেশে।
ছানিপড়া চোখে আজও ভিখ মাগি,
পদের প্রহার খাই সেই রাজাকারদের,
যারা এ স্বাধীনদেশে আজওরাঘব বোয়াল !
কি দিয়েছে আমায় এ স্বাধীনতা ?
দুর্নীতি আর শোষণ এখনো শুষে খায় আমার হাড়মাংস !
হা-ভাতে পড়ে থাকি মুখথুবড়ে।
হে স্বাধীনতা,
আমি চাই না গাড়ি  বাড়ি বৈভব ভিটেমাটি
আমারে দুমুঠো আহার দে,
না হয় ছিঁড়ে খাব উসন্ন এ নোংরা পতাকা।


-সংশোধিত