সূর্যের শেষ ছোবলে আকাশটা রক্তাক্ত হওয়ার আগেই
তার শরীরজুড়ে চারজোড়া হাত
আটপাটি দাঁতের অবাধ্য বিচরণ !
সে চিৎকার করতে চেয়েছিল
ভয়াল হাতের থাবা চেপে ধরেছে কণ্ঠনালী
সে আগলে রাখতে চেয়েছিল
তার আগেই হিংস্র নখের আঁচড়ে ছিঁড়েফেঁড়ে উড়ে গেল ওড়না
কিছুক্ষণ পিঞ্জরবন্দি পাখির মত ঝাপটা-ঝাপটি শেষে
সে আকাশের মত উন্মুক্ত হয়ে গেল !
আকাশ কাউকে বাঁধা দেয় না
সুতরাং সেও আর বাঁধা দিল না—
গোধূলিবেলার মত নিস্তেজ
ঝরাপাতার মত নিষ্প্রাণ
সে মাটিতে পড়ে রইল ।
 
সূর্য ডুবে যায়, রাত্রির ক্যানভাসে ঈশ্বর
রংতুলি হাতে আঁকতে বসেন সেলফ্‌-পোট্রেট
নীলাভ আঁধারে মৌচাকভাঙা মৌমাছির মত
নক্ষত্রদের ছুটাছুটি;
ঈশ্বরের তুলির আঁচড়ে ক্রমাগত গাঢ় হতে থাকে রাত
নীলাভ আঁধার ক্রমশ নীল হয়ে আসে—
সে তখন শীতল মাটির কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে ।
 
সূর্য জাগে, নতুন আশার নির্মল আলো ঢেলে দিয়ে
সদ্যভূমিষ্ঠ শিশুর মত ফুটফুটে ভোরকেও জাগিয়ে তোলে
সোনালি ইশারায় আকাশকে তার কাছে ডাকে;
বিগত ছোবলের ক্ষত মুছতে মুছতে
অভিমানের জমাট-বরফ ভাঙতে ভাঙতে
অবশেষে আকাশটাও ফিরে আসে ।
কিন্তু সে তো আর জাগল না
তার চোখে তো আর কোনো ভোরের আলো লাগল না
অনেক ডাকাডাকি হল, কই, সে তো আর ফিরল না !
 
সূর্য বলল সে ভোরের আকাশের মত ফুটফুটে নির্মল ছিল
ভোরের আকাশ বলল সূর্যের মত জ্বলন্ত তেজস্বী অগ্নিমূর্তি
আর মানুষেরা বলল সে একটা মাংসপিণ্ড ছিল, স্রেফ একটা মাংসপিণ্ড !