পূব পাড়ার ওই দোকানটাতে আর যাইনি জানো!
সাতাশ বছর একটিবারও আর চাইনি ফিরে
ওখানটায় ওই দোকানটাতে এখনো সদাই কেনো?
শিমুল গাছটি লাল হয়েছে আবার আকাশ চিঁড়ে?
তোমার মধ্যে দেখেছিলাম নতুন মহাদেশ
ক্লান্ত নাবিক পাগল ছিলাম একটু ডাঙা খুঁজে
জলের তলে তলিয়ে যাই জীবন যে প্রায় শেষ
ঠিক তখনই দেখেছিলাম তোমায় দু-চোখ বুঁজে


সেদিন আমি কিশোর প্রেমিক প্রথম প্রেমের ঘোরে
শিমুল ফুলে পুঁজেছিলাম তোমায় উজাড় কোরে


দীঘির পাড়ে, জলতরঙ্গের জনসভার মতো
সেদিন আমার কিশোর প্রেমের প্রথম জোয়ার ওঠে
তোমার কাছে বেদিমূলে প্রাণ দিতে উদ্যত
আমার সকল কথা ছিলো নীরবতার ঠোঁটো


পুলের ওপর দুপুর রোদে সূর্য মেখে তুমি
মিতুর সাথে থমকে ছিলে একমুহূর্ত হেসে
পেছন পেছন ছিলে বলে ডেকেছিলো রুমি
চেয়েছিলে দ্বিধায় তুমি পেছন ফিরে শেষে


এখনো কি হাঁটতে তুমি অমন ছন্দ তোলো;
নদীর মতো নরম ঢেউয়ে দু-কূল জলে ছুঁয়ে?
তোমার বরকে আমার কথা কোনো রাতে বলো?
উদাস হয়ে হালকা চালে তার পাঁজরে শুয়ে:


"সেদিন আমি কিশোর প্রেমিক প্রথম প্রেমের ঘোরে
শিমুল ফুলে পুঁজেছিলাম তোমায় উজাড় কোরে"


কাল মনেহয় দেখেছিলাম তোমার ছেলেটিকে
তোমার মতো সুশ্রী মুখটি অহংকারি বড়ো
তখন আকাশ প্রায়ান্ধকার সূর্যের আলো ফিকে
তুমিও যে ছিলে সেথায় লুকিয়ে জড়োসড়ো


হাতে তোমার ফুল ছিলো না, কষ্ট হলো দেখে
এও মনে নেই? কবরখানায় কী ফুল আনতে হবে!
সাতাশ বছর আর আসোনি চোখের জলে মেখে
কাঁদলে তুমি স্মৃতির দায়ে একান্ত নীরবে


না না তুমি ফুল নিও না, সাতাশ বছর পরে
এ ফুল তুমি নাওনি বলে প্রথম ব্যর্থতায়;
বুক পকেটে ফুল নিয়েই আর ফিরিনি ঘরে
হাত দিও না, এ ফুল ফোটে তোমার লাঞ্ছনায়


সাতাশ বছর আর উঠিনি জীবন গেছে শুয়ে
তুমি আসায় সজাগ হলাম সেদিন সন্ধ্যাকাল
দেখলাম তুমি বউ হয়েছো দু-ঠোঁট গেছে ধুয়ে
আমার জন্য অপেক্ষা কি করলে মহাকাল?


বুক পকেটে যে ফুল ছিলো সাতাশ বছর ধরে
এখন সে ফুল অভিমানে শিমুল গাছের গুঁড়ি
আর এসো না, তুমি এখন পরপুরুষের ঘরে
তোমার হাতে দেখতে হলো পরপুরুষের চুড়ি


মনে পড়ে?
পুলের ওপর দুপুর রোদে সূর্য মেখে তুমি
মিতুর সাথে থমকে ছিলে একমুহূর্ত হেসে
পেছন পেছন ছিলে বলে ডেকেছিলো রুমি
চেয়েছিলে দ্বিধায় তুমি পেছন ফিরে শেষে


সেদিন আমি কিশোর প্রেমিক প্রথম প্রেমের ঘোরে
হৃদয় খুলে পুঁজেছিলাম তোমায় উজাড় কোরে