কবি শব্দটা শুনে অনেকেই আঁতকে ওঠি।কবি দেখলেই মুখ চোখ বাঁকা করে তাঁকাই।মুখ টিপে টিপে হাসি। একজন আরেকজনকে ইশারা করে দেখাই- ঐ যে কবি যায়। আড়ালে কবিদেরকে আঁতেল, পাগল, ইত্যাদি নামে ডাকি। অনেকে মনে করি কবিরা হলোখুবই খারাপ লোক,এদের কাছ থেকে সব সময় দূরে থাকতে হবে। অবশ্য এই বদনাম অর্জনের পেছনে কিছু কিছু কবিদেরও বিরাট ভূমিকা রয়েছে। কবি  মানেই পোশাক-আশাক, চলন বলন হবে আউলা ঝাউলা। কাঁধে ব্যাগ,ময়লা পাঞ্জাবি, জোড়াতালি লাগানো স্যান্ডেল ইত্যাদি ইত্যাদি। আচ্ছা একবার গভীরভাবে ভেবে দেখিতো-সব কবিরাই কি খারাপ? সব কবিতাই কি খারাপ? সব কবিদেরকে দেখলেই কি আঁতেল মনে হয়,কিংবা পাগল? অথচ মুক্তিযুদ্ধে এই কবিদেরই অনেক কবিতা,অনেক গান আমাদের প্রেরণা জুগিয়েছে। যার   ফলে আমরা একটি লাল-সবুজ পতাকা পেয়েছি। একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি।      


এবার আমাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআনশরিফের  কিছু  সুরার দিকে লক্ষ করি:-
সুরা এখলাস:


(বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম)


কুলহু আল্লাহু আহাদ              
আল্লাহুস-সামাদ
লাম ইয়া লিদ                      
ওয়ালাম ইউ লাদ
ওয়ালাম ইয়া কুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ।


কী চমৎকার অন্তমিল! প্রতিটিলাইনের শেষ শব্দের শেষ বর্ণ হচ্ছে 'দ'।


সুরা  কাউসার:


(বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম)


ইন্না আ তাইনা কাল কাউসার
ফাছাল্লিলি রাব্বিকা ওয়ানহার
ইন্নাশান ইয়া কাহুয়াল আবতার।


এখানেও প্রতি লাইনের শেষ বর্ণ 'র'।


সুরা ফাতিহা :


(বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম)


আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন
আররাহমানির রাহিম                
মালি কিয়াউ মিদ্দিন
ইয়া কানাবুদু,ওয়া ইয়া কানাস্তাইন
ইহ দিনাছ সিরাতাল মুস্তাকিম
সিরাতাল্লাজিনাআনামতাআলাইহিম
গাইরিল মাগদুবি আলাইহিম
ওয়ালাদ দল্লিন
(আমিন)।


এখানেও এক লাইনের শেষ বর্ণের সাথে আরেক লাইনের শেষ বর্ণের মিল খুঁজে পাচ্ছি।এমনিভাবে আমরা যদি পবিত্র কোরআনশরিফের প্রতিটি সুরা লক্ষ করি তাহলে দেখব কবিতার মতো অন্তমিল। অর্থাৎ প্রতিটি সুরাই এক একটি কবিতা। তৎকালীন আরব সাহিত্যিকরা একবাক্যে স্বীকার করেছিলেন পবিত্র কোরআনশরিফ সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্য। বর্তমানে শুধু মুসলিম মনিষীরাই নয়,বিধর্মীরাও মেনে নিয়েছে পবিত্র কোরআনশরিফসর্বশ্রেষ্ঠ জীবনবিধান ,সর্বশ্রেষ্ঠ  সাহিত্য এবং সর্বশ্রেষ্ঠ মহাকাব্য। মহান আল্লাহতায়ালাই হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ  মহাকবি। তাহলে মহান আল্লাহতায়ালা কবিতা অনেক পছন্দ করেন। তা নাহলে পবিত্র কোরআনশরিফ কবিতার ভাষায় নাযিল করতেন না।
কবিরা মহান আল্লাহরসেই  পছন্দের কাজটাই করছেন। তার মানে এই নয় যে কবিরা খোদা হয়ে গেছেন(নাউজুবিল্লাহ)। বরং এই বোঝাতে চাচ্ছি যে,মহান আল্লাহতায়ালার পছন্দের কাজ যদি আমরা করি তাহলে আমরা তাঁকে খুশি করতে পারব। আর মহান আল্লাহতায়ালাখুশি হলে ইহকাল ও পরকাল হবে শান্তিময়।


যে কবিতা আল্লাহ-রাসুলের কথা বলে, যে কবিতা আল্লাহর সৃষ্টিরকথা বলে, যে কবিতা দেশের কথা বলে,যে কবিতা সত্যের পক্ষে কথা বলে,যে কবিতা অন্যায় অত্যাচারেরবিরুদ্ধে কথা বলে, যে কবিতা  দুঃখী মানুষের কথা বলে, সে কবিতা কি কখনও খারাপ হতে পারে?  আর এসব কবিতা  যে কবিরা লেখেন তারা নিন্দিত না নন্দিতহবেন সে বিচারের ভার আপনাদের উপরই রইল।