[বর্ষা বরাবরই আমার ভিতরে এক ধরনের হাহাকার তোলে, যা বর্ণনা করা অসম্ভব। সেই অনুভূতিই কাব্যিক সুরে তুলে ধরার প্রয়াস মাত্র]


"বৃষ্টিরসুর"


আজ বড় কবি হতে ইচ্ছে হচ্ছে
বাইরে তুমুল বর্ষণ,পানি থই থই
গাছের ফাঁক দিয়ে গড়াচ্ছে পানি পই পই
কুকুর গুলো গোসলে মত্ত
চ্যাংড়া ছেলে গুলো হাঁক দিচ্ছে যত্র তত্র
আমি পুরোনো ইমারতের গায়ে
বর্ষার রেখাচিত্র দেখতে পাচ্ছি স্পষ্ট।
জোর বর্ষার শব্দ বেগবান হচ্ছে
মনে হল কেউ বেহালা বাজাচ্ছে
করূন সুরের ঐকতান মিশে গেছে
সকল সুরে একীভূত করেছে
সব সুরের আজ একই সুর
বেজে চলছে সন্ধ্যা - সকাল,দুপুর
বর্ষার সুর।
বর্ষা নিজেই  মহাকাব্য স্বয়ং
এ যেন প্রকৃতির উৎকৃষ্ট চয়ন।


"প্রতীক্ষা"


আমি হয়ত বহুকাল আগে...
এসেছিলাম এ ধরায়
বয়ে পড়েছিলাম আকাশগঙ্গা হতে
একটি বিন্দু হয়ে।
হয়তবা বহুকাল পরেও
আসব আবার ফিরে
একটি বিন্দু হয়ে।
জলবিন্দুর আবির্ভাবে।
হয়ত বৃষ্টির বেগে, নয়ত শিল রূপে
কিন্ত আমি আসবই- জলবিন্দু হয়ে
মেঘের পরে মেঘ, তাতে জলের আবেগ
একদা ভাংবে বন্ধন,
কোন পড়ন্ত বিকেল কিবা দিনের আরম্ভে
ঝরে পড়ব -আমি হয়ত রৌদ্রের প্রারম্ভে
আমি ফিরে আসব এ ধরা বুকে
সিক্ত করব সকল জাতকে-যা মরে ধুঁকে
আমার ফেরার প্রতীক্ষায়ে
একটি শিশির বিন্দু হয়ে।


"হাহাকার"


বর্ষা আমার হৃদয়ে হাহাকার তোলে
আমি আর বর্ষা
যেন একই সুতোয় গাঁথা।
আমার জগতে একটিই রাণী- বর্ষা রানী
আমি যদি বৃক্ষ হতাম - বর্ষা
আমার বক্ষ বেয়ে পড়ত সদা
সকাল-সন্ধ্যা।
আর যদি হতাম পাতা
ও আমার উপর পড়ত সদা
টুপ-টাপ শব্দ,মন ভোলানো
তাতে হাহাকার ওঠে - হৃদয় দোলানো।
সিক্ত অনুভূতি গুলোর কিয়দংশ
রেখে দিলাম যতনে-
পরের বারের জন্য,
যখন আমি জন্ম নেব বৃক্ষ রাজ হয়ে,
পত্র পল্লবে শোভিত হব, উঠব ধরায় জেগে-
বর্ষা আমায় ভিজিয়ে যাবে - সবেগে।