তুমি আসো না সরাসরি
সোনালী রোদের মতো ধীরে ধীরে নামো আমার জীবনে।
তুমি জানালার ফাঁক গলে ঢুকে পড়ো,
চায়ের স্টিমে পাক খেয়ে
আমার চোখের পাতায় এসে বসো।

আমি জানি
এখন তুমি বিশ্বাস করো
প্রথম দেখায়ও প্রেম হয়।
তুমি ভাবো
আমাদের অতীত ছিল এক দীর্ঘ নিঃশ্বাস,
যেখানে আমরা হাঁটছিলাম পাশাপাশি।

বাসার বারান্দায় দাঁড়িয়ে ভাবি
তুমি কি কোনদিন আসবে?
না জিজ্ঞেস করি না কিছু,
শুধু চায়ের কাপটা হাতে ধরি,
ধোঁয়ার মধ্যে দেখি তোমার মুখ।

তুমি “ভালোবাসি” বলো নাই কখনো,
তবু আমি বুঝে গিয়েছিলাম
এটাই তো প্রেম!

এই যে সন্ধ্যার হঠাৎ হাওয়া,
এই যে বাড়ির পুরনো গেট,
এই যে ঝুলে থাকা মানি প্ল্যান্ট,
আর আমার বারান্দার নিরবতা
এই সবকিছুর মধ্যে তুমিই তো আছো।

তুমি না বললেও আছো,
না ছুঁয়েও ছুঁয়ে যাও।

আমি চুপ থাকি
কিচেনের কোণে দাঁড়িয়ে
সালাদ কাটতে কাটতে
তোমার নাম উচ্চারণ করি মনে মনে।
নুডুলসের স্টিমে তোমার চোখ খুঁজে ফিরি।
চায়ের কাপে ঠোঁট ছোঁয়ানোর আগেই
তোমার স্পর্শ যেন থেকে যায় কাপে।

তুমি কিছু বলো না,
তুমি আবেগে ভাসো না,
তবু তোমার প্রতিটি “হুম”এর ভেতরে
থেকে যায় একরাশ অপেক্ষা।

অফিসের প্রেজেন্টেশন স্লাইডে
তোমার নাম ছিল না
তবুও তুমি ছিলে
প্রতিটি লাইন, প্রতিটি নোট,
আমার মাথার ভেতর,
মুঠোফোনের ওয়ালপেপারে,
আর কফির কাপের ধোঁয়ায়।

তুমি সারাদিন একটাও কথা বলো না,
ক্যালেন্ডারে শুধু দাগ কেটে রাখো
পরবর্তী মিটিং ডেট।
আর আমি মনেমনে লিখে রাখি
অনেক যুগ আগের এই দিনটায়
তুমি আমার পাশে বসেছিলে।

তুমি কিছুই বলো না,
আমি তবুও বুঝে ফেলি
তুমি একটু বেশি ক্লান্ত।
তুমি কি চাও,
আমি গিয়ে তোমার কাঁধে হাত রাখি?

আমি রাখি না।
শুধু চুপচাপ মনে মনে
এক কাপ চা এগিয়ে দিই তোমার দিকে।
তুমি কাছে নেই, তবু যেন কাছে থাকো।

না থাকা তুমি,
সবচেয়ে বেশি থাকার মতো থাকো আমার সঙ্গে।