সহসা এক বাবু সাহেব এসে বললেন,
রামগোপাল যাবি? ঘোশ পাড়ার ডান হাতে।
আড়াইশো টাকা বকশিস দেবো তোকে,
আমায় যদি নিয়ে যাস তোর সাথে।


যদিও দূরত্বটা অনেক,
পারবে কি সে এই তপ্ত পায়ে পৌঁছাতে?
স্ত্রীর কাতরানো শরীর,
মনে পড়ে যায় তার পূর্বের রাতে।


চাই তার টাকা অনেক
যত দূর হোক যেতে তাকে  হবে।
সর্বশক্তি দিয়ে টানবে সে রিকশা,
পাবে সে আড়াইশো টাকা তবে।


স্ত্রীর জন্য কিনবে সে ঔষধ
ছেলের জন্য থাকবে স্কুলের বেতন।
আড়াইশো টাকা তার মনে হয় যেন আজ,
বিপদে প্রাপ্ত রতন।


বাবু উঠি বসিলেন রিকশা পরে
রামগোপাল টেনে চলে রিকশা।
তপ্ত ঝাঁ ঝাঁ রৌদ্রে,
রাস্তা হয়ে যায় আজ ঝাপসা।


সূর্যের তাপ বেড়েছে যেন খুব
মাথার ঐ উপরে।
ধিরে ধিরে ক্লান্তি নেমে আসে
এ ভরা নির্জন দুপুরে।


হাত হয়ে যায় অবশ
পা আর পারে না চলতে।
তার দুঃখের কথা নেই কেউ সোনার,
তাই পারে না মুখ ফুটে বলতে।


তপ্ত রাস্তা পা পুড়ে যায়
মাথা ঝিম ঝিম করে তার।
চারিদিক হয়ে আসে আধার
রিকশা টানতে পারে না আর।


বুকটা করে ওঠে ধড়ফড়
চোখ হয়ে যায় অন্ধ।
সমস্ত শক্তি শেষ হয়ে,
শ্বাস হয়ে আসে বন্ধ।


আর একটু পথ বাকি
পাবে সে আড়াইশো টাকা।
কে জানে আজ তার
মৃত্যু কপালে আছে আঁকা।


বাবু পৌঁছে গেছে,
রামগোপালের হলোনা ফেরা বাড়ি
আজও অপেক্ষায় আছে স্ত্রী পুত্র
এ সমাজ থেকে নিয়েছে সে আড়ি।
          ..............


//৬ ডিসেম্বর ২০১৭//