অন্তরালে


তুমি নিজেও জানো না ব্যালকনিতে তোমার কিছু প্রয়োজনীয় খুটখাট শব্দ
কারো  চৈত্রের শিমূল  তলা হয়।
সাদা সাদা তুলোপাপড়ির ভিতর পুতে দেয় তোমার কতক আসা যাওয়া।
কখনও তুমি ব্যস্ত গামছা নাড়ো তারে, কখনো সার্ট, কখনও জাঙ্গিয়া।



তুমি নিজেও জানো না তোমার পিঠের ঐ সংকোচী তিলটা
একঝাঁক পায়রা হয়।
উড়ে উড়ে আমার বাড়ির কার্ণিসে বকম বকম কথা বলে।
তোমাকে খেয়ে এসে  কতক  মশা আমাকে কামড়ায়  
আমি জানি বলে  ধুপ জ্বালাই না ।
পেটভর্তি তোমার আমার রক্ত মিলেমিশে একাকার।
এভাবেই তুমি ছড়িয়ে  আছো আজও আমার রক্তে ,
আমার হৃদয় ,আমার সমস্ত অনুভূতির কোষে।


আর তুমি ঘুমাও ,কলেজ যাও ,প্রেমিকার ঠোঁটে ফেলে আসা সুখ নিয়ে আবারও ব্যলকনিতে ভিজে গামছা নাড়ো।
তুমি  জানলে না গাছতলা দিয়ে  কিশোরী এক হেঁটে যায় এখনও ত্রিশে ,
অবুঝ তার ভরা ভরা চোখ ।
ডালে ডালে ভালোলাগা পাতা ধরে রাখে ।


পাতা ঝরাবার বেলা এলে এখনো ব্যালকনি ছুঁয়ে আসে হলদে শীত ।
আমায় বলে ঢাকো কবুতর সব, ঘরে রাখো।
তুমিও ঢেকে রাখো তিল।
জুতো নাও, নিচু হয়ে ফিতে বাঁধো, মাকে বলো আসছি।
তারপর এক শূন্যশব্দ বাজিয়ে  তুমি নিখোঁজ আজও...


তবু  আমি কবুতর উড়িয়ে দিই  তোমার সন্ধানে।
চৈত্র এলে তুলোফল ফাটার অপেক্ষায় থাকি
যেন তুমি আসবে ...   প্রয়োজন  কিছু গেছো ফেলে ।
শীত এলে হলদে পাতায় খুঁজে নিই সবুজ সবুজ সেই ব্যস্ততম দিন।
এভাবেই এই বাংলায় ছয় ঋতু
ঐ তারটায় কেউ না কেউ এখনও ভিজে গামছা মেলে


প্রতিমা রায়বিশ্বাস