রাজসিক বায়ু


এই নে ছেমড়ি  একগ্লাস জল খা।
আমি চিনি তোকে... তুই আম্রপালী।
মাটির চামড়া  ফাটা এই বসন্ত দুপুরে একটা দুটো সবে তোর কচি কচিপাতা
ছুঁয়ে নেচে যায়  নর্তকী রৌদ্রমালা....
নিমেষে বাঁশের বেড়াবোনা এই হৃদপিন্ডটি অন্দরমহল।  যেন সেই  রাজকন্যা
নেচে উঠি আমিও ....আম্রপালী।
শ্বেতপাথরের পরতে পরতে সমুদ্রের ঢেউ আঁকা  হিন্দোল ....
আমার অঙ্গের মুদ্রায় দেখ তুই ভারতনট্টম, কত্থক ,কুচিপুরি।
কলমে উচ্ছাস , অসংখ্য অক্ষর বেলাভূমি ছুঁয়েছুঁয়ে ফিরে যায় সমুদ্রে ।
আয় নে সেই সমুদ্র থেকে একগ্লাস জল তোকে দিই। খা আম্রপালী।



আমি তোকে প্রতিদিন গ্লাসে ভরে ভারতবর্ষ দেবো
বিনিময়ে তুইও ছেমড়ি আমায় ভারতবর্ষ ই দিস।
আমের মুকুলে ছড়ানো গুটি কতক ভোরের আলো,
মৌমাছির গুঞ্জন ।
কাঁচা আমের আঁতুরগন্ধ মাখা উড়ন্ত কিছু ভিজে ভিজে দুপুর দিস
স্নান সেরে চুল ঝাড়বে মগধের রানী ।
একঝাঁক পশ্চিমা প্রজাপতি দলে দলে অভিনয়ে আনমোনে
আমফুলে জমা বৈদিক মধু।দেখ আম্রপালী।


তোকে আমি প্রতিদিন একগ্লাস জল দেবো
বিনিময়ে  দিস তোর ছায়া
ফাল্গুনী বাতাস এলে ওকেও একটা উঠোন দিস তুই।
মাঠে মাঠে পঞ্চশস্য ফলিয়ে এলে চাষী
ওকেও ছেমড়ি ....তুই বসতে দিস
আমাদের রক্তে এখনো খেলা করে সেই ঈশ্বর ঈশ্বরী  
হাওয়ার  রক্তেও সেই রাজকীয় বায়ু ।
এখনও চাষী সেই বুক মেলে শুয়ে থাকে মাঠে
এখনও ভগবান। আত্মহত্যার হুমকি শুনে ঠেকাতে যায় অকাল বর্ষণ।


ভগবান এলে ছেমড়ি ফেরাস না তাঁকেও
আমের পল্লব চাইলে দিয়ে দিবি।
আমি তোকে বিনিময়ে একগ্লাস জল দেবো প্রতিদিন আর।  
আর দেবো দুটো ফুল।
ভগবান এলে  ফেরাস না ছেমড়ি। বসতে দিবি ।


প্রতিমা রায়বিশ্বাস