ভয়ঙ্কর কোরাস
-
ড্রাকুলারা শুষে নেয় রক্তের পেয়ালা
এরিবাস ছড়িয়ে দেয় চারপাশে অন্ধকারের
কুয়াশা
শিল্পের দরজায় পৌঁছে গেছে রক্তের নদী
লাল কালীতে প্রস্তুত খন্ডে শোভা পায়
টিপিক্যাল আর্ট
অসময়ে ঝড়ে পড়ে সবুজ পাতা
ভয়ে-ভয়ে বাতাস হেঁটে যায় দূর পথে
অর্ধ পশু অর্ধ মানুষের কন্ঠে শোনাযায় ভয়ঙ্কর
কোরাস
প্রাত্যহিক সূর্যের আবর্তনে ভেসে ওঠে, ঝকঝকে
হাহাকার।
.
এভাবে অন্ধকারে গাদাগাদি করে -আর কতো?
চাবিদেয়া পুতুলের মতো -পর্দার আড়ালে
দেবতারা মানুষের ভাগ্য লিখ যাবে আর কতো?
প্রতিবাদের কন্ঠ খুঁজে কি পাবেনা মানুষ?
.
যুগে যুগে এই মানুষইতো পাথর, বর্শা, লগুড় নিয়ে
গুঁড়িয়ে দিয়েছে শত্রুর ডেরা
মার্ক্সের কন্ঠ চুরি করে রাজপথে লাগিয়েছে
আগুন
সংস্কারের নেশায় খুঁজে পেয়েছ সত্যের পথ।
তবে এখন কেন রথের চাকায় লাগবেনা বাতাস?
কেন ঢেউয়ের লিগামেন্ট ছিঁড়ে, ছুটবেনা সত্যের
স্টিমার?
.
বুকে রক্ত, চোখে আগুন নিয়ে কবির কন্ঠে
তাই জেগে উঠি বারবার_
"চলে যাব- তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,"
==
.
পথ চলা
_
ভুল গুলো যদি ফুল হয়ে যেতো জীবন চলার পথে
লেখা হতো যদি জীবনের পাতা আবার প্রথম
হতে।
.
এক এক করে কেটে গেল দিন মাঝখানে কতো
রাত
যারা ছিলো পিছে উঠে গিয়ে তারা দেখালো
আলোর হাত।
.
বসন্ত এলো গাছে এলো কুঁড়ি ফুটলোনা হয়ে ফুল
ঝরে গেল পাতা মরে গেল গাছ ফুল কুঁড়ি আর মূল।
.
অভাব দেখেছি স্বভাব দেখেছি দেখেছি মানুষ
গুণ
কখনো জুটেছে কখনো জোটেনি মরিচ পান্তা
নুন।
.
দেখেছি স্বপ্ন আকাশের নীল খোলা মাঠ আর
নদী
ফুটো ঘরে শুয়ে বৃষ্টিতে ভিজে দেখেছি দুঃখ
নদী !
.
বিপদে মানুষ সব কাজ ফেলে দাঁড়িয়েছি তার
পাশে
আগুন মানিনি পানিও দেখিনি ওরা যেন তবু
হাসে।
.
প্রতিদিন ভোরে পড়েছি মন্ত্র আদর্শ নিয়ে
বাঁচার
ভালো থাকে যেন পৃথিবী-মানুষ দুস্থ পাখিটি
খাঁচার।
.
এইভাবে ঠিক কেটে গেছে দিন আসলো আঁধার
নেমে
হিসেবের খাতা হাতে নিয়ে দেখি গেছি আমি
আজ থেমে !
_
ছন্দ -মাত্রাবৃত্ত
=
.
চে
_
বিপ্লবের আগুন বুকে নিয়ে হেঁটে গেছে সে
কিউবা থেকে বলিভিয়া -
মুক্তিকামী মানুষের সদা পাশে ছিল সে।
.
বুলেট কেস, ওষুধের ঝোলা কাঁধে ছুটে গেছে সে
ফিদেল কাস্ত্রোর মস্তিষ্ক হয়ে; কাজ করেছে
সে।
.
জঙ্গলের মতো ভ্রু, মোটা চশমার
ছদ্মবেশ নিয়ে দেশে-দেশে ঘুরুছে সে
পর্বত ক্যাম্প থেকে গেরিলা যুদ্ধের, নেতৃত্ব
দিয়েছে সে
.
ল্যাটিন আমেরিকা থেকে পৃথিবীব্যাপী,
বিপ্লবের দাবানল জ্বালিয়েছে সে
যীশুর মতো মানুষের বুকে-বুকে এখনও ছবি হয়ে
ঘুরছে সে
কে সে?
সে কৃষক, শ্রমিক, মেহনতী মানুষের
চে!
.
চে
চে
চে
যদি একবার ডাকো তুমি তাঁকে
বাবড়ি চুল, জলপাই-রঙা পোশাক
চোখে আগুন, আর বুকে বুলেটের নয়টি সুরঙ্গ নিয়ে,
দিব্যি উঠে আসে সে!
==
.
কালচক্র
_
সময় চলে যায়; অন্তরঙ্গ বন্ধুর মতো
বুকে তার ধারালো গতি...
.
হতে পারে সে একজন পথিক
হতে পারে সে একজন রহস্য ঘেরা মানুষ
হতে পারে সে একজন আত্মভোলা যাযাবর
আমি তার পেছনে ছুটছি দুর্নিবার...
.
আমার ফেলে আসা পদচিহ্ন গুলো, হিংস্র
দানবের মতো
ভেসে নিয়ে যাচ্ছে কালের স্রোত,
জীবনের পথে, যে বর্ণমালা গুলো আমি
ছাড়াতে-ছড়াতে এতদূর এসেছি, একঝাঁক উড়ন্ত
পাখি
তা খুঁটে নিচ্ছে শস্য দানার মতো..
পেছনে ফেরার সমস্ত পথ তাই আমার বন্ধ।
.
পরিচ্ছন্ন মুখগুলো ক্রমশঃ ঝাপসা হয়ে আসছে,
অন্ধকারে চুপসে যাওয়া ধূসর বাড়িটির মতো।
মগ্ন প্রকৃতির রঙ বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে, শেওলানো
দেয়াল যেমন -
মনের অন্ধিসন্ধিতে জমে যাচ্ছে থোকা-থোকা
মেঘ,
অন্তিম শয্যা থেকে ভেসে আসছে শোকের
মাতম!
.
শরীরের একাংশ গঙ্গা-জলে রেখে কেউ-একজন
শ্মশান থেকে বয়ে আনছে দাহের তাজা খবর,
.
...কি এক অদৃশ্য হাওয়া, ছেঁড়া পলিথিনের মতো,
ধূলোর অন্ধকারে ডুবোচ্ছে আমাকে
আমি তার রাখিনি খবর!
_