আমি হেঁটেছি তার সাথে বহু পথ
আজও হাঁটছি ...
নিরন্তর চলার শেষ নেই।
সেই কবে শুরু হয়েছিল
মনে পড়ে কি...!
সায়নী তখন কিশোরী
সে তার বেনি দু’টো দুলিয়ে
স্কুলে যেত।
নীল আকাশের চোখে চোখ রেখে
আমি অপেক্ষা করতাম তার আসার
পথ চেয়ে।
সে বলতো কি রে স্কুলে যাবি না।
তাকে দেখার ছটফটানি  আমি প্রথম বার
উপলব্ধি করেছিলাম।
স্কুলে যেতে মন না চাইলেও যেতাম।
শুধু সায়নীর জন্য।
সে তখন দুই বেণী বালিকা...
আর আমি এক নির্বোধ কিশোর।
সেই বয়স থেকে সায়নীর শুরু হয়েছিল
ভালোবাসার জাল বোনা
তখন শরীরে তাপ ছিল না
শুধু ছিল মানবীয় ভালোবাসা
তার চোখে ছিল অন্তহীন আকাশ ছোঁয়ার
স্বপ্ন । যেখানে তার স্বপ্নেরা খেলা করে
নীল সবুজ দিগন্তে।তার সাত রঙের দিনরাত্রি।
সায়নী হারিয়ে যেত নীল দিগন্তে তার স্বপ্নের
মায়াজাল বুনতে বুনতে।
অদ্ভুত এক গ্রীষ্ণের দাবদাহে
আমরা ছিলাম স্কুলে—
জানালার পাশে ছিল সায়নী
যত দূর যায় দৃষ্টি – শুধু ধূ ধূ করা মাঠ
আর ঝলসে যাওয়া প্রান্তর।
আর কিছুই দেখে নি সে...
বৃষ্টি নেমে ছিল অতন্দ্র বর্ষণের কালবেলা।
বিস্তীর্ণ চরাচর ডুবিয়ে যেন বান
এসেছিলো। সায়নী ভয় পেয়েছিল
আমাকে জাপটে ধরে বলেছিল এ অকাল
বর্ষণের কি শেষ নাই।
¬--- আমার সমস্ত স্বত্বার মাঝে
দেখি জলছবি।
সায়নীর ভালোবাসা বর্ষার রূপ নিয়ে
নেমে আসে আমার পৃথিবীতে।
সময়ের বিবর্তনে পাল্টে যায় প্রকৃতি
পরিবর্তন আসে সায়নীর
  (সায়নী)
দেহমনে। চারপাশে কিশোরীর মত চপল
দৃষ্টি রেখে উঁকি মারে দেহের গ্রন্থিগুলো।
তার সলজ দৃষ্টিতে উদ্দাম ভালোবাসা
যেন এক সুন্দর ভোরের রূপালি চাঁদ
তার বর্ণময় রূপের আলো
আমাকে বিমোহিত, উদ্ভাসিত করেছিলো।
তার ভালোবাসার শিকড় আমার মনের গভীরতাকে
স্পর্শ করেছিলো।
মনে হত সায়নী আমার শূন্য হৃদয়কে আচ্ছন্ন
করে রাখে—
তখন মনে হত এই আকাশ, এই মৃত্তিকা
অরন্য সাগর আমার চারপাশে যা কিছু সব
যেন আমার বেঁচে থাকার অবলম্বন।


                                        ক্রমশঃ ...।