অন্ধকার ফুঁড়ে জেগে ওঠে আমার
স্মৃতির শহর।
সমস্ত নিস্তব্ধতার ভিতর থেকে জেগে ওঠে কল্লোলিনী
বৃষ্টির মত শিহরন নিয়ে জেগে ওঠে
আমার ছায়া।
অদূরে বাসের শব্দ, ট্রামের ঘর্ঘর ধ্বনি
হাজারও মানুষের কোলাহল।
একটানা চীৎকার-তর্জনভরা অশান্ত দুপুর।
মনে পড়ে সেই উদ্দাম দামাল যৌবন
বট গাছের নীচে প্রেমিকার সঙ্গে খুনসুটি।
সেই বট গাছ আজ নেই,
সেখানে উঠেছে ইটের ইমারত।
সেই কফি হাউস, খালাসিটোলা
কলেজপাড়া আমাদের হোস্টেল
সব পাল্টেছে।
নির্বোধের মুখোশ পরে আমরা
বানিজ্যিক সফলতায় আমাদের এই
স্মৃতির শহরকে করেছি
আত্মীয়-বান্ধবহীন।
জীবন কেটে যায় কোন ভোগবতী রমণীর মত
গাঢ় নীল জ্যোৎস্নার বিচ্ছেদ-বেদনায়—
অস্পষ্ট দাগের মত বুকে জেগে
থাকে ব্যথার নিশানা।
ঘাম আর শ্বাসের মাঝখানে বাকলহীন
এই সভ্যতা বড় নগ্ন লাগে।
নৈঋত থেকে ছুঁটে আসা এ কোন হাওয়া
বদলে দেয় জীবন সরিয়ে সব অবহেলা
প্রেম-বিহ্বলতায় ভাসতে থাকে ক্রান্তীয় চাঁদ
নতুন সূর্য ওঠে পার্ক সার্কাস মোড়ে
হাজার অভিমন্যুর রক্তাক্ত পায়ে
হাজার দ্রৌপদীর খোলা চুলের পাশে
হাঁটতে থাকে আমাদের কলকাতার রাস্তা বাড়ী।