সামনে ফাইনাল পরীক্ষা তাই আমি
অ্যানাটমি প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা
প্রস্তুতির জন্য কলেজের পাঁচতলা
ঘরে হাজির।
আমাদের ডোম সদানন্দকে বললাম
লাশটা টেবিলের উপর শুইয়ে দাও
শবাধার থেকে সে লাশটা টেবিলে
উপর রেখে চলে গেল।
আমি আপ্রন পরে, হাতে গ্লভস পরে
স্কালপেল ফর্ক হাতে আমি আপন মনে
নিমগ্ন যখন—
মনে হল কেউ আমার সঙ্গে কথা বলছে
আমার শরীরটা ছমছম করে উঠল।
‘-- আর কত আমার উপর ছুরি চালাবে’
আমার মনে হল লাশটা উঠে বসল—
মেয়েটা বলল তুমি আমাকে চেন ।
আমি বললাম - না
জিঞ্জাসা করলাম- তুমি কি জীবনান্দের
বনলতা নাকি সুনীলের নীরা।
আমি কেউ নই। আমি দেহাতি
সাধারন সাঁউতালী মেয়ে । দিকশুন্যপুর।
আমিও তো একজনকে ভালবেসেছিলাম
কিন্তু তোমার মত কিছু লোক রেপ করে
যাকে বলে তোমাদের ভাষায় গ্যাংরেপড্‌
তখন আমি চার মাসের গর্ভধারিণী
বীভৎস যন্ত্রনার মাঝে ওরা আমাকে
কুরে কুরে দগ্ধ করেছিলো
আমি দেখতে পাচ্ছিলাম
চারিদিক রক্তে ভেসে যাচ্ছে
আমার চোখের সামনে ঘোর কালো অন্ধকার
আর আজ আমি তোমার সামনে
‘তোমার হাতেও ছুরি -’  
মৃত্যুর পরেও আমার নিস্তার নেই।
আমি নির্বাক হয়ে যায়।  
কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম।সারা
শরীর ভিজে যায়, সদানন্দের
ডাকে সম্বিত ফিরে আসে
আমি সিঁড়ি দিয়ে নামতে থাকি
ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি -  সাঁউতাল
মেয়েটি সিঁড়ির মাথায় দাঁড়িয়ে।
চোখ দিয়ে তার রক্ত ঝরছে...