জীবনের টান যদি নাও থাকে
তাতে আক্ষেপ নেই কিছু ।
শুধু অর্থহীন বেঁচে থাকা।
সময়ের কাছে আক্ষেপ করে কিছু
লাভ নেই। সময়ের অনন্ত প্রবাহে
ক্ষয়ে যায় জীবনের প্রতিটি ক্ষণ।
সে জানে তার এই মূল্যহীন বেঁচে থাকায়
কোন ভালোবাসা নেই।
ধূসর দৃষ্টি নিয়ে –
নিষ্পলক সে দেখছে রাস্তার উপর
চড়ুইপাখীর ধূলিস্নান।
সে দেখে নিচ্ছে কলকাতার ফুটপাথে
শুয়ে থাকা উলঙ্গ শিশুর কান্না।
যতখানি পারে সময়ের সাথে
সে দুচোখে ভরে নেয় আকাশের নীল।
গাছের সমারোহ সবুজ রঙ।
মেঘ ফুঁড়ে নেমে আসা বৃষ্টির ধারা।
জীবনের এত বর্ণ, এত ধ্বনি, রূপের এত বৈভব
তবুও তো বেঁচে থাকা মূল্যহীন নয়।
সে জানে  সময়ের কাছে ফুরিয়ে যাচ্ছে
তার জীবন। তার দুই চোখে গভীর তমসা।
সে দেখে নিচ্ছে- ভালোবাসাহীন জীবনে  
নেমে আসে সূর্যের কালো ছায়া।
মাথার উপর উড়ে যাওয়া হলুদ পাখী।
একযোগে ঝরে যাওয়া গোলাপ, স্বর্ণচাঁপা।
সে দেখে নিচ্ছে দুচোখ ভরে—
থেমে যাওয়া নদীর কান্নার মত
ব্যথিত প্রেমের করুন দীর্ঘশ্বাস।
যতখানি পারে সে শুনে নিচ্ছে
একইসাথে পশু, পাখী আর মানুষের ভাষা।
বিধ্বস্ত বেলাতটে দাঁড়িয়ে সে মুখোমুখি
দেখে নিচ্ছে লক্ষ মাইল বেগে বয়ে
যাওয়া সামুদ্রিক ঝড়।
জীবনের অনন্ত প্রবাহ শেষে উপলব্ধি
তার অন্তঃসার শুন্য । প্রীতি আর স্নেহের বন্ধনে
ছিন্ন হয়ে যাওয়া প্রেম।
সে দেখে নিচ্ছে তার করুন চোখের
কোনে ডুবে যাওয়া একফালি চাঁদ।
নেমে আসে চির রাত্রি চির অন্ধকার।