মহাবিশ্বই মহাকাব্য!
মহাপরাক্রম আল্লাহ্ই যার স্রষ্টা।
যার মাঝে আছে প্রেম, ভালবাসা, বিরহ, বেদনা, দ্বন্দ্ব!
আছে মহাকাশ, সাগর, বাতাস, নৈসর্গিক ছন্দ,
চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, তারা আছে, আছে নক্ষত্রের আপন কক্ষ;
যার যার পথে চলে নিরবধি কেউ নয় যেন অন্ধ!


মহররম হলো আরবী সনের দিন-পঞ্জির প্রথম মাস;
‘আশারা’ থেকেই আশুরা হয়েছে বঙ্গার্থ যার দশ।
যাহার মাঝে লুকিয়ে রয়েছে সৃষ্টি তত্ত্বের রস!
মহররমের দশম তারিখে স্রষ্টা করেন সৃষ্টি,
শূন্য থেকে বিশ্বকে এনে তাহাতে দিলেন দৃষ্টি!


এই তারিখেই আদম(আঃ) আসেন জান্নাত ছেড়ে পৃথ্বীতে!
তওবার পরে সাক্ষাৎ হয় বিচ্ছিন্না হাওয়া(আঃ)’র সনে!
এই তারিখেই মিলিত হন তাঁরা আরাফাত ময়দানে!
চল্লিশ দিন পাথারে ভাসিয়া নূহ নবী(আঃ) ফের স্পর্শ করেন মাটি;
আঠারো বছর রোগ ভোগ করে মুক্ত হন আইয়ুব নবী(আঃ),
ধৈর্যের বাঁধ ভাঙ্গেনি তাঁহার, হলেন শুদ্ধ, খাঁটি!


মুসলিম জাতির মহান পিতা ইব্রাহিম(আঃ);
নিক্ষিপ্ত হলেন খোদাদ্রোহী নমরুদের অগ্নিকুন্ডে!
এই তারিখেই মুক্ত হলেন খোদার রহমত গায়ে মেখে!
নবী ইউনুছ(আঃ) মুক্ত হলেন চল্লিশ দিন মৎসের পেটে থেকে,
মহাবিশ্ব বিস্মিত হলো প্রভূর ক্ষমতা দেখে!


মুসা নবী(আঃ) তাঁর দলবল নিয়ে পার হন নীলনদ,
বহু লক্ষ সৈনিক নিয়ে ডুবে মরে ফেরাউন মহাবদ!
ইহুদীদের দেয়া শূলদন্ড থেকে রক্ষা করার তরে
ঈসা নবী(আঃ)কে নিয়ে যান খোদা চতুর্থ আসমানে!


থরে থরে যেন সাজালেন খোদা আশুরার ইতিহাস
বাঁকে বাঁকে তিনি করেছেন স্বীয় অতুল গুণ প্রকাশ;
এই তারিখেই শেষ হয়েছিল নির্মাণ পবিত্র কা’বার,
প্রতিক্ষণে জনে জনে করছে তাওয়াফ যার,
যাকে কেবলা করে সারা বিশ্বের মুসলিম জাতি
উপাসনা করে বিশ্বের বিধাতার।


এই দিবসেই কেয়ামত হবে, হবে ভবে মহা প্রলয়!
ধ্বংস হবে ইহলৌকিক সাজানো মহা আলয়!


পার্থিব মোহ গ্রাস করেছিল এজিদের অন্তর!
এই দিবসেই আখেরী নবী(সাঃ)’র
দিলের টুকরা জান্নাতী যুবদের সর্দার
ইমাম হোসাইন(রাঃ)শহীদ হলেন;
খুন রাঙা হলো কারবালা প্রান্তর!


তখন দুপুর, ঘুমিয়ে ছিলেন ইবনে আব্বাস(রাঃ);
স্বপ্নে দেখেন প্রিয় নবীজী(সাঃ)কে, আলু-থালু তাঁর বেশ!
মাটি মাখা দেহখানি তাঁর, অবিন্যস্ত কেশ।
বলছেন তিনি,
“চেয়ে দেখ এই বোতলে আমার ইমাম হোসাইন(রাঃ)’র রক্ত,
শহীদ হয়েছে ফোরাতের তীরে, সাথে ছিল তাঁর স্বজন, ভক্ত!
দেখেছি দাঁড়িয়ে লালে লাল হতে কারবালা খুনে সিক্ত!
হাশরের মাঠে রবের সমীপে পেশ করে আমি বলবো,
বিনিময়ে চাই, হে দয়াল প্রভূ, আমার উম্মত করো মুক্ত।”