সেদিন যাচ্ছি হিমাচলপ্রদেশ,
সেদিন প্রথম দেখলাম পাহাড়ের রূপ,
সেই অপরূপ আর অপরূপা ।
তাদের দেখলাম, আর প্রচুর অনুভব করলাম।
পাহাড়ের গভীরতার প্রথম অনুভূতি,
পাহাড়ের উচ্চতার প্রথম অনুভূতি,
কি অসাধারণ এক ভয় বিশিষ্ঠ রূপ,
আমি তখনও পাহাড়মুখি।


গরমের মধ্যে সিমলায় এক স্বচ্ছ ভাবমূর্তি,
নরম বাতাসটা যেন পাহাড় ঠেলে সোজা আমার শরীর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে,
তখনও আমি পাহাড়মুখি।
সিমলা, কুফরী, কুল্লু-উপত্যকা,
পেরিয়ে চলে এলাম মানালি।
প্রথম অনুভূতি প্রথম আলাপ ,
কি আনন্দ! প্রথম এত্ত বড় পাহাড় প্রথম এত্ত বড় পাহাড়।


কক্সার পাহাড় কক্সার বরফ,
আনন্দ, অনুভূতি, আর বরফের চাদর,
তিন মুর্তির অসাধারণ রুপ মিসৃত আদর।
গাড়ি থেকে নেমে অবাক চোখে তাকিয়ে ছিলাম অনেক্ক্ষন,
এটা কি সত্যি নাকি একমুহূর্তের অকস্মাৎ আলিঙ্গন?
বুঝে ওঠার আগেই হঠাৎ মনে হল বরফ স্পর্শ করলাম,
তখন সেই বরফের চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে রইলাম।
সত্যিই এটা সত্যিই! মনে হচ্ছে ছোট্টবেলার কোন এক রূপকথার গল্প৷
কত্ত কি মনে হচ্ছিল, এত্ত বরফ এত্ত আনন্দ,
কিন্তুু সময় খুবই স্বল্প।


হিম পাহাড় এ বসে বসে সঞ্চয় করছিলাম জীবনের কিছু আনন্দ ও ভয়ের সচ্ছল স্মৃতি,
হঠাৎই শুরু হল হিম-বৃষ্টি ,উফফ থাকা যায়না আর সেখানে (-৪ ডিগ্রি)! সেই হিম বৃষ্টি।
যত লিখছি তত মনে পড়ে জাচ্ছে ,
আর যত মনে পড়ছে তত লিখছি।


সবুজ অসংখ্য ঘন পাইন গাছে মোড়া পাহাড়,
আর ধবধবে সাদা বরফে মোড়া পাহাড়,
যেন মনে হল ঠান্ডায় নতুন সবুজ সাদা চাদর মুড়ি দিয়েছে সমস্ত পাহাড়।


শুধু পাহাড় পাহাড় আরও পাহাড় ।
এটা অনুভুতির কিছু অংশের প্রকাশ,
আর পুরো টা রয়ে গেছে পাহাড়ের উপর খোলা আকাশ।


আমি এখনো পাহাড় মুখি,
আমি এখনো পাহাড় মুখি।
সেটুকু পাহাড়ে চড়ার অবকাশ।
সেটুকু বরফের স্রোতে ভাসার অবকাশ।
এই ছোট্ট লেখা অনেক স্মৃতির প্রকাশ।
শেষ বেলায় ভারাক্রান্ত মন নিয়ে ,
আবার যাত্রা শুরু সেই ভারী ভারী ব্যাগ নিয়ে।


সেই পুরনো দুরপাল্লার ট্রেনের শব্দ,
আবার সেই পুরনো  দুরপাল্লার ট্রেনের গন্ধ।
কিন্তুু এখনো মনে পড়ছে সেই বরফের স্তূপ এ পড়ে যাওয়া,
এখনো মনে পড়ছে বরফে শুয়ে নিজের সাথে সেলফি তোলা,
প্রাণ ভরে বরফ দেখা,
প্রাণ ভরে বরফের পাহাড় অনুভব করা॥
প্রাণ ভরে সেই প্রথম বরফের মুহূর্ত,
প্রাণ ভরে সেই উঁচু আকাশ ছোঁয়া পাহাড়; দেখার মুহুর্ত,
স্বল্প হলেও অল্প সময়ই কত স্মৃতি জায়গা করে নিয়েছে সেই মুহুর্ত।


ট্রেনে বসে ভাবছি সেগুলো , ভাবছি আবার চলে যাই।
কিন্তু আর ফিরে দেখার কোন উপায় নাই।
কিছু দিনের প্রচুর স্মৃতি নিয়ে নিয়েছি,
তা দিয়েই কিছুটা লিখছি।
মনে হচ্ছে সেই পাহাড়ের উপর হাঁটছি,
যেন এখনো সেই পাহাড়ের রাস্তায় আমি!
কোথাও যেন যাচ্ছি।


ভবঘুরের ভাবতরংজ্ঞে আমিও যেন ভাসছি।
সেই পাহাড়ের উপর কোন এক ছোট ঘরে বসছি।
রাতের ও দিনের সব মুহুর্ত মনে করছি,
সেই পাহাড় এ আমি এখনো যেন ঘুরছি!
পাহাড় আমায় টানছে,
নাকি আমি পাহাড়ে হারিয়ে গেছি?
সেই আমি ঘুরে ফিরে,
বাড়িতে এসে জীবন কে দেখি যেন,
আমি এখনো পাহাড় মুখি।