মথুরা নগরপতি, রাধাকে মনে পড়ে তোমার?
সেই যে গোকুলে আয়ান ঘোষের বোউ!
সম্পর্কে নাকি তোমার মামি হত।
হ্যাঁ সেই কলঙ্কিনী রাধা।
এক্সট্রা ম্যারিটাল এফেয়ার্স!
অবশ্য তোমার মনে না থাকারই কথা।
এখন রাজা তুমি, অমন কত হাজারটা আয়ান ঘোষের বোউ এখন তোমার আশেপাশে দাশী বাদি হয়ে আছে।
কিন্তু জানো সেই মেয়েটা, রাধা, বোকা মেয়ে!
সে তোমার মন ভোলানো বাঁধানো কথাগুলোকে
সত্যি বলে ভেবেছিল।
তখন সে কত রাশ লীলা আর কত সে হোলি খেলা।
সে কি জানত এ নিছক ঐ যে কি বলে, হ্যাঁ, টাইম পাস।
গ্রামের সাদামাটা মেয়ে তো!
কতই না জ্বালাতন করেছো তুমি তাকে!
রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে বেকার বদমাশ ছেলে ছোকরারা যেমন মেয়েদের উত্তক্ত করে!
আসলে তুমিও তো গোকুলে পাড়ার মোড়লের আদুরে বেকার ছেলেই ছিলে।
আজ পুলিশে এফ.আই.আর করলে চান করার সময় মেয়েদের কাপড় চুরি করা, গাছের ডালে বসে
মেয়েদের চান করতে দেখা, মোলাষ্টেশনের অপরাধে
তোমার জেল হত।
কত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে বলো?
তোমরা তাড়াতাড়ি ভুলে যাও, ভুলতে পারো।
এখন তোমার পাশে তোমার সুন্দরী রানীরা,
স্ট্যাটাস বলেও তো কিছু আছে নাকি!
টাইম পাস যার তো যার সাথে করা যায়, তাই না?
তোমার আর রাধার কাহিনী নিয়ে কত চর্চা হল, কাব্য হল, কবিরা বিখ্যাত হল।
সে সময়ে মিডিয়া থাকলে কত কেচ্ছাও হত।
আমরা আবার কেচ্ছা খুব ভালোবাসি।
রাতের অন্ধকারে, বর্ষায় বাদলে কতবার বাঁশি বাজিয়ে ঝোপে ঝাড়ে নিয়ে যেতে মেয়েটাকে।
আর আজ সেসব তোমার মনেই পড়ে না?
কি আশ্চর্য তোমারা!
আজও হয়তো তোমার নখের দাগ খুঁজলে তার ঘাড়ে পিঠে কোথাও পাওয়া যাবে।
ভালোবাসা নিছক মিথ্যা।
মুহূর্তের প্রয়োজনটাই আসল।
রাধাকে আর খুঁজে পায়নি কেউ।
তুমি তো খোঁজার চেষ্টাও করোনি।
তার ননদেরা অনেক গাল মন্দ করেছিল।
সমাজ বলেছিল কত কথা।
অনেকবার সে অসহায় রাধা ভেবেছিল তোমার কাছে পালিয়ে যাবে,
কিন্তু তুমি তো স্বীকারই করলে না।
রাত গেইয়ি বাত গেইয়ি।
মথুরা নগরপতি, রাধাকে মনে পড়ে না তোমার?
জানতে ইচ্ছে হয়না আজ সে কোথায় আছে, কেমন আছে?
একদিন যার শরীরের এক একটা তিল তোমার মুখস্থ ছিল,
আজ তাকে দেখতে ইচ্ছে হয় না?
ভালোবাসা মিথ্যে, না রাজন?
আজ তাই রাজার বিছানায় শুয়ে তোমার গোকুলে রাধার কোলে মাথা রেখে কাটানো রাত গুলো মনে পড়ে না।
বা হয়তো মনে পড়ে, কিন্তু আজ রাজা তুমি,
ষ্ট্যাটাস বলেও তো কিছু আছে নাকি?