বাড়ির চৌকাঠে দাড়িয়ে শাশুড়িমার প্রথম আদেশ হল 'এবার মা লক্ষীর মত বড় বড় পায়ের ছাপ ফেলে গৃহে প্রবেশ কর!'
এতক্ষণে বুঝলাম কেন পাত্রী দেখতে এসে ওনার প্রথম নজর আমার পায়ের দিকে গেছিল।
চীন দেশে সুন্দরীর বিচার শুনেছিলাম কার কত ছোট পা হয় তা দিয়ে হয়, এক্ষেত্রে অবশ্যই সম্পূর্ণ উল্টো। কিন্তু সাত নম্বরের জুতো পায়ে বাঙালি নারী সহজ কথা নয়। আচ্ছা বলতে পারেন মা লক্ষী কত নম্বরের জুতো পরেন?
অগত্যা পেডিকিয়র করা পা'খানা লাল আলতার জলে ডোবাতেই হল।
আলতায় পারদ আছে বলে এক তো বিয়ের দিন কত কষ্ট করে পার্লারের মেয়েটি বাইপাশ মেহেন্দি পরিয়েদিয়েছিল পায়। আজ বুঝলাম মানুষের কিছু চেষ্টা জলেই যায়।
জন্ম থেকে ফ্ল্যাটে আমরা চারটি প্রাণী, আর আজ হঠাৎ প্রনামের লাইনে পঞ্চাশ জন।
এতদিন মুভের যে বিজ্ঞাপনটা টিভির অনুষ্ঠানের মাঝে বিরক্তি মনে হত, আজ সেই 'আহ্ সে আহা তক' এর প্রকৃত প্রাসঙ্গিকতা খুঁজে পেলাম।
পঞ্চাশটা প্রনামের পর উঠে দাঁড়াতে যাব কি পাশ থেকে এক বয়স্ক ভদ্রমহিলা বললেন 'বউমা ইনি তোমার চাচাতো মামা শ্বশুর বিলেতে থাকেন ....'
পুরো কথাটা শোনার আর ধৈর্য নেই, প্রমাণই যখন করতে হবে তখন বায়োডাটায় কাজ কি। দিলাম একান্ন নম্বর প্রনাম ঠুকে। যাক এবার মেরুদণ্ড সোজা করার সময়।
প্রতিজ্ঞা করেছিলাম শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে গালি দেব না, কিন্তু একান্ন নম্বর প্রনাম প্রাপকে দেখে সর্বসমক্ষে বলেই ফেললাম "What the f**k".....সবাই হা।
নীলরতন গোস্বামী!!! চিরকালের ব্যাকবেঞ্চার!
বারো ক্লাসের ভ্যালেন্টাইন্স ডে তে ভুলভাল বানান করে ইংরেজিতে প্রেম পত্র লিখেছিল বলে সবার সামনে জোর চাঁটা মরেছিলাম যাকে।
ভালই প্রতিশোধটা নিলে বন্ধু।
দিদিভাই ঐ এক কুইন্টালের বেনারসিটা পরাতে পরাতে ঠিকই বলেছিল "খুব শখ না, সেজেগুজে ঢঙের সঙের মত, দেখ আর বিয়ে করবি!"
এখন আমার উত্তরটা অবশ্যই 'না!'