রোজগেরে মেয়ে
সংহিতা
সঞ্জয় বলল চল এবার বিয়েটা সেরে ফেলি-
সমিতা সরাসরি না করে দিল ।
আবাক হয়ে সঞ্জয় তাকিয়ে রইল সমিতা্র দিকে-
সমিতা এরকম একটা উত্তর দেবে ,একেবারে আশাও করেনি সে।
এতদিনের প্রেম, এতদিনের সম্পর্ক সবটাই কি তাহলে মিথ্যে-
সেই কোন ছোট বেলার বন্ধু ওরা –
শমিতার এ কথায় যেন হটাত আকাশ ভেঙ্গে পড়ল তার মাথায় ।
সঞ্জয় নিজেকে সামলে নিয়ে কিছুক্ষন নীরব হয়ে থাকল ।
সমিতা একেবারে চুপ,
এবার সঞ্জয় গম্ভির গলায় বলে উঠল ,
তোর ব্যাপারটা আসলে কি সত্যি করে বলতো –
এতদিন পর একটা চাকরি পেলাম , আর তুই বলছিস আমায় বিয়েই করবিনা-
মাসের শেষে চল্লিশ হাজার টাকায় চালাতে পারবি না –
সমিতা এবার হেসে উঠল ,
শমিতা হাসি  সঞ্জইয়ের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে দিল-
আসম্ভব রাগে যা মুখে আসছে তাই বলে যাছে সঞ্জয় –
বড় লোক বাবার একমাত্র মেয়ে , আমার এই ছোট্ট সরকারি চাকরি তে মন ভরছে না , অনেক অনেক টাকা চাই তোর তাই না-
...এরকম অনেক আজে বাজে কথা বলার পর সঞ্জয় বলল ,মুখে কোন কথা নেই কেন –
নির্লজ্জ মেয়ে কোথাকার , আসলে আমার ভুল , তকে অন্যরম ভাবতাম –
কিন্তু তুই বাকি সবার মতই , শুধু টাকাটাই সব হল তোর কাছে –
পয়সার জন্য , আমাদের এতদিনের সম্পর্ক ,এতদিনের ভালবাসা এক সেকেন্ড ভেঙ্গে  চুরমার করে দিলি-
এরপর থেকে তো আমার মেয়েদের প্রতি বিশ্বতাটাই ভেঙ্গে গেল –
আসলে সত্যি কথা কি জানিস ,
এতকথার পর তবুও সঞ্জয় উঠে চলে যেতে পারছে না ,
ওর বিশ্বাস ই হচ্ছে না , শমিতা এরকম করতে পারে –
এবার সঞ্জয় স্মিতার হাত দুটো ধরে আঝরে কেঁদেই ফেলল –
আর কাঁদতে কাঁদতে বলেই চলেছে তুই কেন এরকম করছিস,
কেন আমায় বল –
এবার শমিতা তুই থামলে তো আমি কিছু বলবো ,তাই না-
চিরকাল এক রোগ তোর একবার বলতে শুরু করলে তোকে থামায় কে?
সমিতা সঞ্জয়ের চোখ দুটো মুছিয়ে ,  বলল-
তুই যে আমায় এতগুলো কথা শোনালি , তা বেশ ভালোই করেছিস –
না হলে জানতেই পারতাম না –আমি কেমন মেয়ে ঠিক তোর কাছে-

সঞ্জয় বলল মানে –
মানে টা হল গিয়ে আমি কি একবার বলেছি যে আমি তোকে বিয়ে করবো না
তবে কি মজা করলি আমার সাথে ,কি রে তুই-
স মিতা এবার শান্ত সহজ সবরে বল্ল , না মজা নয় ,
আমি এখনো রোজগার করতে শিখিনি ,
তাই-
সঞ্জয় আরও অবাক হল , তাতে কি-
আমিতো চাকরি একটা পেয়েছি ,
ওটাই তো, তোর রোজগারে বসে খেতে আমার ভাল লাগবে না ,
-
কেন তুই তো আমার বউ , আমার টাকা নিতে আসুবিধে কোথায়-
না ঠিক আসুবিধে নয় –আসলে কি জানিস ত-
যদি ধর তুই তুই চাকরিটা পাসনি-
আর আমি মাসে চল্লিশ হাজার রোজকার করে তোকে নেই –
আর কিছু বলতে দিল না সঞ্জয় স মিতাকে –
এবার বুঝেছে সে সবটা-
তাই মাথা নিচু , চোখে চোখ রাখতেই পারছে না -
কিকরে ক্ষমা চাইবে সে সমিতার কাছে বুঝে উঠতে পারছে না -